ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ যেসব এলাকায় আঘাত হানতে পারে

ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ যেসব এলাকায় আঘাত হানতে পারে
ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ যেসব এলাকায় আঘাত হানতে পারে  © সংগৃহীত

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, লঘুচাপটি ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করে ২৩-২৪ অক্টোবরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’য় পরিণত হবে। এই ঘূর্ণিঝড় উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রভাব ফেলতে পারে।

আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় অংশে প্রভাব ফেলবে। এটি আগের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের মতো একই পথে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলু রশীদ বলেন, ‘লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এবং এর গতিপথ বলছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানলে বাংলাদেশের খুলনার দিকে আঘাত হানারও সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫ তারিখের দিকে উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে সময় কম পাচ্ছে। তাই এর গতিবেগ খুব বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। খুব বেশি শক্তিশালী হবে না ঘূর্ণিঝড়টি।’

আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে দেশের সমুদ্রবন্দরের জন্য কোনো সতর্কসংকেত নেই। তবে লঘুচাপটি ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী হতে পারে। যার ফলে লঘুচাপটি থেকে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা করছেন এই আবহাওয়াবিদ। চলতি সপ্তাহের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ‘লঘুচাপটি মঙ্গলবার নিম্নচাপ, বুধবার দুপুরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ ও একই দিনে সন্ধ্যার মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পরে এর নাম হবে ডানা। এই নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের দেওয়া। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ডানা সৃষ্টির আশঙ্কা ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ।’

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে পলাশ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ডানা আগামী ২৩ অক্টোবর রাত ১২টার পর থেকে ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে সরাসরি তীব্র ঘূর্ণিঝড় বা সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম (৮৯–১১৭ কিমি/ঘণ্টা) হিসাবে স্থলভাগে আঘাত করার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন: সাগরে লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ আঘাত হানতে পারে ২৪ অক্টোবরের মধ্যে

তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান যে পথে স্থলভাগে আঘাত করে অগ্রসর হয়েছিল, এই ঘূর্ণিঝড়টিও প্রায় একই পথে অগ্রসর হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের মেদিনিপুর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলা এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।’

এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৭-৮ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ ফুট বেশি উচ্চতার পানি হতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ