লন্ড্রিতে চলে এক সন্তানের মা রঞ্জিতার সংসার
এক সন্তানের মা রঞ্জিতা রানী, বয়স ৩৫ বছর। বিধবা এই নারী লন্ড্রির দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। লন্ড্রি চললে সংসার চলে তার। রঞ্জিতা রানী ভোলার দৌলতখান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত প্রাণ কৃষ্ণ হাওলাদারের মেয়ে।
১৮ বছর আগে ভোলার কালীখোলা যোগীবাড়ির মৃত হরিজন দেবনাথের ছেলে কালা চাঁন বাবু দেবনাথের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় রঞ্জিতা রানীর। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে কাটছিল। এরই মধ্যে তাদের কোলজুড়ে শ্রীকান্ত দেবনাথ নামের একমাত্র ছেলেসন্তান পৃথিবীতে আসে। ছেলের জন্মের ১ মাস ১০ দিন পর পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী-সন্তান রেখে কালা চাঁন বাবু দেবনাথ অন্যত্র চলে যান।
পরে রঞ্জিতা রানী ১১ মাস পর তার স্বামী কালা চাঁন বাবু দেবনাথের পরলোকগমনের খবর পান। এ শোককে শক্তিতে পরিণত করে বৃদ্ধ মা-বাবা ও সন্তানের জীবিকার জন্য অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ নেন রঞ্জিতা। গৃহপরিচারিকার কাজ করলেও দুবেলা নিয়মিত খাবার জুটত না। তাদের কষ্ট দেখে এলাকার লড্রির দোকানি দিলীপ লন্ড্রির কাজ শেখান রঞ্জিতাকে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রঞ্জিতা বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর পর বৃদ্ধ বাবা-মা ও সন্তানের কষ্ট দেখে প্রতিবেশী দিলীপ আমাকে লন্ডির কাজ শেখান। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় দৌলতখান উপজেলা ব্রিজ-সংলগ্নে একটি টিনশেডের দোকান নির্মাণ করে দেন। দোকানে কোনো দিন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা রোজগার হয়। আবার কখনো ১০০ টাকার নিচে। লন্ড্রি চললে চলে আমাদের সংসার।’
আরও পড়ুন: ভোলায় ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের সনদ দিল পুলিশ
রঞ্জিতা রানী আরও জানান, তার ছেলে শ্রীকান্তের স্বপ্ন লেখাপড়া করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করার। শ্রীকান্ত দৌলতখান সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। সামান্য উপার্জনে ছেলে লেখাপড়ার খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
রঞ্জিতা রানী অভিযোগ করেন, অসহায় বিধবা নারী হয়ে সরকারি কোনো ভাতার সুবিধা পাননি তিনি।
স্থানীয়রা জানান, রঞ্জিতা রানী খুবই অসহায়। বিত্তবানরা এগিয়ে এলে রঞ্জিতার পরিবারটির কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।