‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েও জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সর্বতোভাবে সমর্থন দেওয়ার পরে জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘যে ছাত্রদের আন্দোলনে আমরা সমর্থন দিয়েছি, আমাদের নেতা-কর্মীরা অংশ নিয়ে হামলা-মামলার শিকার হয়ে জেল খেটেছে, সেই আন্দোলনের হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের আসামি করা হচ্ছে। এই অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না। আমরা রাজপথে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ করবো। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের সাথে অবিচার হচ্ছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীরা রক্ত দিয়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে এর প্রতিবাদ করা হবে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েও জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার।’
জাতীয় পার্টির শীর্ষ এ নেতা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি সর্বতোভাবে সমর্থন দিয়ে সক্রিয় ছিল। আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেওয়ায় আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রংপুরে মামলা হয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় গ্রেপ্তার হয়ে হাজতবাস করেছে।’
জিএম কাদের বলেন, ‘গত ১ জুলাই ছাত্ররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করলে, আমি ৩ জুলাই সংসদে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বক্তৃতা করেছি। বক্তৃতায় আমি বলেছি, ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থি। বৈষম্যের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। ৬ জুলাই গাজীপুরে জাতীয় পার্টির কাউন্সিলে বক্তৃতায় আমি বলেছি, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি। তখন আমি বলেছিলাম, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি হচ্ছে বৈষম্য।’
জুলাইয়ে আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করা হলে মুক্তির দাবি তোলার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনে যখন গুলি চালানো হলো, আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছি আমরা। রাজনীতিবিদদের মধ্যে সবার আগে রংপুরে গিয়ে শহিদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছি আমি। শহিদ আবু সাঈদের শোকার্ত মা-বাবাকে সান্ত্বনা দিয়েছি। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ছাত্র আন্দোলনের সাফল্য নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একটি চক্র জাতীয় পার্টিকে ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষের দল হিসেবে চিহ্নিত করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’