পাবনায় আওয়ামী লীগের হামলায় বিএনপির ২৫ নেতাকর্মী আহত
স্থানীয় একটি ক্লাব দখলকে কেন্দ্র করে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় আওয়ামী লীগ কর্মী সমর্থকদের হামলায় বিএনপির অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় দুইজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে এবং অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকীদের ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের পুকুরপাড় গ্রামে এ ঘটান ঘটে। এ ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। তবে আটককৃতদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, পুকুরপাড় গ্রামের বাসিন্দা ও বিএনপি কর্মী আবুল কালাম, আকরাম হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, আবুল কালাম-২, গাজীউর রহমান, আব্দুল জব্বার, ঈমন আলী, আব্দুল মমিন, ছাব্বির হোসেন, শাহিন হোসেন, হেলাল উদ্দিন, আবু তালেব, আলো প্রমানিক। এছাড়া গুরুতর আহত নিরজাব আলী, সাহাদত হোসেন, ছানোয়ার হোসেনকে পাবনায় এবং আব্দুল মালেক নামের একজনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার পুকুরপাড় গ্রামের শতাধিক সদস্য বিশিষ্ট ‘‘উদয় সংঘ’’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন (ক্লাব) রয়েছে। ক্লাবটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বিএনপি কর্মী সালাম ফকির, শামসুল ইসলাস ও হেলাল উদ্দিনের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। সম্প্রতি খানমরিচ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ফয়জুল ইসলাম, সানোয়ার হোসেন, আহম্মদ আলী ও রওশন আলী বিএনপির কর্মী সমর্থক সালাম ফকিরের কাছ থেকে জোরপূর্বক ক্লাবের চাবি নিয়ে নেন।
ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও ক্ষান্ত হননি তারা। বিএনপির নেতাকর্মীদের শায়েস্তা করতে শনিবার সন্ধ্যায় প্রায় শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী সংগঠিত হয়ে অতর্কিত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সালাম ফকিরসহ তার লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ২৫ জন বিএনপি কর্মী সমর্থক মারাত্মক আহত হন। পরে তাদের ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং জড়িত সন্দেহে ৪ জনকে আটক করে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানায়নি পুলিশ।
ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এলাকা ছেড়ে পলাতক থাকায় তাদের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর মুজাহিদ স্বপন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি, কিন্তু এখনও বিস্তারিত কিছু জানি না। আমার এলাকার অন্য একটা বিষয় নিয়ে আমি ব্যস্ত আছি। পরে ঘটনা বিস্তারিত জেনে আপনাকে জানাবো।’
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ক্লাবের চাবি নিয়ে বিরোধের জেরে হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের মধ্যে চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।’
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, ‘আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়া গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনা ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’