মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা বন্ধ, অভিযানে থাকবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে এবার ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে কার্যকর হচ্ছে এই নিষেধাজ্ঞা।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এ ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, ইলিশ সুরক্ষায় বিজ্ঞানীরা পূর্ণিমা ও অমাবস্যার সঙ্গে মিল রেখে দিন নির্ধারণ করেন। আর গবেষকেরা বলছেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল হলেই বাড়বে ইলিশের প্রাপ্যতা।
এ জন্য ২২ দিন সব ধরনের ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
চাঁদপুরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার জেলেদের পাশাপাশি থাকছে ক্রেতা-বিক্রেতার ওপর নজরদারি। ইলিশ ধরা বন্ধে অভিযানে এবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি থাকবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরাও।
চাঁদপুরের মতলবের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত এক শ কিলোমিটার অভায়াশ্রম এলাকায় ইলিশ ধরা, মজুত, বেচা-কেনা ও পরিবহন নিষিদ্ধ। নিষেধাজ্ঞার সময়কে সামনে রেখে ইতোমধ্যে জাল ও নৌকা তীরে উঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন জেলেরা।
আরও পড়ুন: ইলিশ ধ্বংসে আ.লীগের সঙ্গে এখন বিএনপিও যুক্ত হয়েছে
এ সময় জেলেদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে ভিজিএফের চাল দেয়া হবে। তবে বরাবরের মতো জেলেদের দাবি, চাল নয়, আর্থিক সহায়তা দিলে উপকৃত হবেন তারা। সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান সফল হলে ইলিশ উৎপাদন বাড়বে বলে প্রত্যাশা তাদের।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইলিশের ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। গত বছর ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ স্প্যান ছিল। তবে এবার এই স্প্যান অতিক্রম করতে পারে।
চাঁদপুর নদী কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু কাউছার দিদার বলেন, ২২ দিনের অভিযান সফল হলে জেলেরা জালে ইলিশ পাবেন আশানুরূপ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, ‘ইলিশ সম্পদ রক্ষা হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হন জেলেরা। মা ইলিশ রক্ষায় কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য, সেনাবাহিনী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরাও থাকবেন এবারের অভিযানে। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞার সময় কোনো বরফকল খোলা থাকবে না।’
কেউ ইলিশ কেনাবেচা করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক ও জেলা টাস্কফোর্সের সভাপতি।
চাঁদপুরে ৪৪ হাজার জেলে থেকে বেড়ে এবার ৪৭ হাজার ১৫৩ জন জেলে নিবন্ধিত রয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ।