১২ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৪৭

‘সুন্নাহর মাঝেই রয়েছে বৈষম্যমুক্ত আদর্শ দেশ গড়ার চাবিকাঠি’

ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ আয়োজিত সিরাতুন্নবী (সা.) সম্মেলন  © সংগৃহীত

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেছেন, ইসলামের প্রতিটি বিধানই মানব কল্যাণের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। মুসলিম জীবনের সর্বাবস্থায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহর অনুসরণ করতে হবে। রাসূলের সুন্নাহর মাঝেই রয়েছে বৈষম্যমুক্ত আদর্শ দেশ ও সমাজ গড়ার কার্যকর চাবিকাঠি।

গতকাল শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ আয়োজিত সিরাতুন্নবী (সা.) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ছাত্র জমিয়তের সভাপতি রিদওয়ান মাযহারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক আরও বলেন, গবেষণা করলে দেখা যাবে ইবাদত-বন্দেগি থেকে শুরু করে ইসলামী বিধান ও নির্দেশনার সবকিছুই যদি মেনে চলা হয়, তাহলে জগতে শান্তি আর শান্তি বিরাজ করবে। কোথাও কোনো জুলুম-অত্যাচার থাকবে না। অবিচার ও বেইনসাফি থাকবে না। সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে। মানুষের নিরাপত্তা ও মর্যাদা সমুন্নত থাকবে। আর ইসলামের বিধানকে চিনতে ও বুঝতে হলে রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন এবং সাহাবায়ে কেরামের জীবনী অধ্যয়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন উৎখাতের পর এখন দেশের সর্বস্তরে বৈষমুক্ত দূর করে ইনসাফ ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার আওয়াজ জোরদার হয়েছে। শান্তি, সহনশীলতা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার কথা বলা হচ্ছে। জাতীয় স্তরে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহর পরিপূর্ণ ও যথাযথ অনুশীলন চালু করতে পারলে খুব সহজেই শান্তি, সম্প্রীতি, বৈষম্যমুক্ত ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ সহজতর হবে। 

ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূর হোসাইনের যৌথ সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।

তিনি বলেছেন, মানবকুলের মুক্তিদূত রাসূলুল্লাহ (সা.) বিশ্ববাসীকে ইনসাফ ও সাম্যের এক সুন্দর পৃথিবী উপহার দিয়েছেন। দুগ্ধপোষ্য নবজাতক থাকা অবস্থায়ও দুধ মা হালীমা সাদিয়া (রা.)-এর এক পার্শ্বের স্তন থেকে দুধ পান করে অপর পার্শ্বের স্তন থেকে কখনোই দুধ পান না করে দুধ ভাই আব্দুল্লাহর প্রতি ইনসাফ কায়েমের যে নজির স্থাপন করেছেন, তা থেকেই তৎকালীন বিশ্ব এই বার্তা পেয়ে যায় যে, এই সূর্য সন্তানই একদিন অধিকারবঞ্চিত মানুষজনকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন। বাস্তবেও তিনি তাই করে দেখিয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার একপর্যায়ে একজন নারীর চুরির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর শাস্তি কার্যকর করার আগে তার শাস্তি মওকুফ করার সুপারিশ আসলে ওই সুপারিশের জবাবে মহানবী (সা.) বলেছিলেন, আমার কন্যা ফতেমাও যদি চুরি করত, তাহলে আমি অবশ্যই চুরির শাস্তি হিসেবে তার হাত কর্তন করার আদেশ দিতাম। ইনসাফভিত্তিক একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে মহানবী (সা.) পৃথিবীর মানুষকে যে পথ দেখিয়ে গেছেন, একমাত্র সে পথই পারে মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে। এর বিপরীতে অন্য কোনো পথে সব প্রকার বৈষম্য দূর করে একটি আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণ কখনোই সম্ভব নয়।

পরে সীরাতুন্নবী (সা.)-এর ওপর কুইজ ও প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার ও ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিরা।