শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলায় জড়িত ছিলাম না: বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম
সাতক্ষীরায় ২০০২ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে মাফুজাকে ধর্ষণের ঘটনায় তাঁকে দেখতে শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় এসেছিলেন, সে ঘটনার বিচার তিনি করেননি। উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে আমাকে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। কিন্তু ওইদিন আমি সাতক্ষীরাতেই ছিলাম না, ঢাকায় ছিলাম।’
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরিতে সাতক্ষীরা সাংবাদিক কেন্দ্র আয়োজিত ‘দায় যার জবাব তার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাতক্ষীরায় মৎস্যজীবী দলের নেতা,সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি আমানুল্লাহ আমান হত্যার ঘটনায় আমি বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। একই সাথে রাজনৈতিক কোনো মামলায় সাংবাদিকদের না জড়ানোর বিষয়ে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে হামলার ঘটনায় করা মিথ্যা মামলায় আমাকে ৭০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছিলেন বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল,সেই বিচারক ঢাকায় সম্প্রতি বিচারকদের সভায় বক্তব্য দিয়েছেন। আমি বিষয়টি আইন উপদেষ্টাকে জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ২০০০ সালে কলারোয়ায় এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে অত্যাধিক ভিড়ের কারণে ৬জন পরীক্ষার্থী পদপিষ্ট হয়ে মারা যায়। নিহতদের পরিবারকে সান্তনা দিতে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া কলারোয়ায় আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাকে কলারোয়ায় ঢুকতে দেয়নি। ২০০২ সালে কলারোয়ায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে,এমন অভিযোগ তোলা হয়। তাকে দেখতে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। পরে যশোরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে তিনি নির্বিঘে কলারোয়া পার হন। তবে কলারোয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমানসহ কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে সামান্য কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। সে সময় তিনি (হাবিব) ঢাকাতে থাকা সত্বেও তাকে বিনা কারণে ৭০ বছরের সাঁজা দেওয়া হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন ছিল সেনা সমর্থিত সরকারের পাতানো নির্বাচন। খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে ব্যর্থ হয়ে পূর্বপরিকল্পিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনে সেনাসমর্থিত সরকার।
অপর একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। বিএনপির কোন নেতা-কর্মী অপরাজনীতির সাথে জড়িত হলে তার ছাড় নেই । জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। বিএনপির দেওয়া ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে উদার ও কল্যাণমুলক রাস্ট্র গঠনের সমস্ত উপাদান রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সাতক্ষীরার উন্নয়নের বিষয়ে তার ভাবনার বিষয়ে হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন.সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে পর্যটনকেন্দ্র,জলাবদ্ধতা নিরসন,বেকারত্ব নিরসনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাসহ টেকসই উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হবে।
অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরা সাংবাদিক কেন্দ্র টকের সমন্বয়ক এসএম বিপ্লব হোসেন ও সমন্বয়ক রিজাউল করিমসহ সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।