বাড্ডায় রেনুকে পিটিয়ে হত্যা মামলার রায় আজ
রাজধানীর বাড্ডায় সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করার তথ্যাদি সংগ্রহে গিয়ে ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত তাসলিমা বেগম রেনু হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন। রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা দাবি জানিয়েছেন নিহত রেনুর স্বজনরা।
তাসলিমা বেগম রেণু তার সন্তান তুবাকে ২০১৯ সালের ২০ জুলাই সকালে বাড্ডা উত্তর–পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ছেলেধরা সন্দেহে স্কুলের সামনে গণপিটুনির শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় ওই রাতেই রেনুর বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনকে আসামি করা হয়। পরে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে গণপিটুনিতে জড়িত কয়েকজনকে শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ভাইরাল হওয়া মোবাইল ফোনের ভিডিও এবং সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শত শত মানুষের সামনে কয়েকজন যুবক ৪০ বছর বয়সী রেণুকে নির্মমভাবে লাথি মেরে পদদলিত করছে। এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করলেও রেণু হত্যা মামলার নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
পরে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ ছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্ক দুজনের বিরুদ্ধেও চার্জশিট দাখিল করা হয়। এই দুই শিশুর মামলাটি ঢাকার নারী ও শিশু টাইব্যুনাল-৭ এ বিচারাধীন রয়েছে।
আসামিরা হলেন, ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লা, রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন, মো. শাহিন, বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি ওরফে শহিদুল ইসলাম, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, আসাদুল ইসলাম, বেল্লাল মোল্লা, মো. রাজু ওরফে রুম্মান হোসেন ও মহিউদ্দিন।
গত ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ‘মব জাস্টিস‘ বা তাৎক্ষণিক বিক্ষুব্ধ জনতার বিচারের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় রেণু হত্যা মামলার নিষ্পত্তির বিষয়ে নতুন করে দেশজুড়ে আলোচনায় আসে। দেশে চলমান মব জাস্টিস বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত ক্ষেত্রে আদালতের আজকের রায় এবং পর্যবেক্ষণ সমাজে একটি গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন নাগরিক সমাজ।