বিসিএসসহ স্থগিত পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসছে কাল
বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা স্থগিত রেখেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। স্থগিত পরীক্ষাগুলো শুরু করা ও ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি যথাসময়ে প্রকাশসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশেষ সভা ডেকেছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোহরাব হোসাইন বলেন, স্থগিত পরীক্ষাগুলোর বিষয়ে আলোচনা করতে সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে কিছু সিদ্ধান্ত হয়তো আসতে পারে। তা ছাড়া ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি এবং বিভিন্ন অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যদের প্রতিবেদন ও তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
এদিকে আজকের সভায় বিসিএসসহ ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের যে অভিযোগ উঠেছিল, তা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন পিএসসির একজন সদস্য।
এর আগে পিএসসির একটি দায়িত্বশীল সূত্র দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর, ইন্সট্রাক্টরসহ অনেকগুলো নন-ক্যাডারের পরীক্ষার ফল প্রায় প্রস্তুত। এগুলো প্রকাশের বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হবে। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন স্থগিত হওয়া ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা এবং ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ নিয়েও সভায় আলোচনা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিএসসির শীর্ষ এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিসিএসসহ বেশ কিছু নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে পিএসসির একটি দল। ডিবি, সিআইডি, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরসহ সবার কাছে প্রশ্নফাঁসের তথ্য-প্রমাণ চাওয়া হলেও কোনো পক্ষই প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এ অবস্থায় নিয়োগ কার্যক্রমগুলো কতদিন স্থগিত রাখা যায়?
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নন-ক্যাডারের একাধিক পরীক্ষার ফল প্রস্তুত। তবে চলমান ইস্যুর কারণে তা প্রকাশ করা যায়নি। তবে বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে আসায় এসব নিয়োগের ফল প্রকাশের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সভায়।
এ ছাড়া বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা, চাকরিরতদের বিভাগীয় পদোন্নতির পরীক্ষাগুলোও স্থগিত করেছে পিএসসি। সবশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা শুরুর এক দিন আগের রাতে বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রথম অর্ধবার্ষিকী বিভাগীয় পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ‘ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (দশম গ্রেড)’ পদের ব্যবহারিক পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন প্রশাসনে চাকরিরত বিভিন্ন ক্যাডারের কয়েক হাজার কর্মকর্তা।
অন্যদিকে অনেক নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফলও আটকে গেছে। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টরের প্রায় এক হাজার পদে দীর্ঘদিন আগে পরীক্ষা শেষ হলেও ফল প্রকাশ করা হয়নি। কয়েক মাস ধরে প্রার্থীরা অনশনসহ আন্দোলন করে আসছেন। তাতেও সাড়া মিলছে না। নার্সিং-মিডওয়াইফারি নিয়োগের পরীক্ষার ফলও আটকে আছে।
এদিকে আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিপিএসসির সব নন-ক্যাডার পরীক্ষার ফলাফল ও বিপিএসসির কার্যক্রম দ্রুত করার জন্য শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নন-ক্যাডার ফলপ্রত্যাশী ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা এক দফা দাবি দেন। এ দাবি মানা না হলে তারা কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন। এ নিয়ে তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনির সচিব বরাবর স্মারকলিপি দেন।