২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১০

মোহাম্মদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা

প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় দুইজনকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, রায়েরবাজার এলাকার “সাদেক খান কাঁচাবাজারের” স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সময় দুইজন মারা যান।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মুন্নাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এবং নাসিরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত দুইজন হলেন- নাসির (৩০) ও মুন্না (২২)। এদের মধ্যে নাসির ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মুন্না সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

নিহত মুন্নার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা এলাকায়। তবে তিনি নানীর পরিবারের সঙ্গে মোহাম্মদপুরের শঙ্করে থাকতেন। বাবার নাম বাবুল। মুন্নার আড়াই বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। অন্যদিকে, নাসির মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বালিগ্রামের শাহ আলম বিশ্বাসের ছেলে। রায়েরবাজার বারৈইখালী এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন।

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রায়ের বাজার এলাকার কিশোর গ্যাং লিডার এলেক্স ইমনের নেতৃতে কিশোর গ্যাং গ্রুপের দেড় শতাধিক সদস্য কবরস্থানের ভেতর থেকে তিন চারজনকে ধরে নিয়ে আসে আজিজ খান রোডে। এ সময় তিনজনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে নাছির ও মুন্না ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বাকি কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় শাহীন নামে এক যুবকসহ আরও প্রায় ৮-১০ জনকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে।

নাসিরকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন শাওন নামে এক তরুণ। তিনি নিজেও এ ঘটনা আহত হয়েছেন। তবে তার দাবি, এ ঘটনায় কোনো গ্রুপের সঙ্গেই তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

আরও পড়ুনঃ দীঘিনালায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের সূত্রপাত যেভাবে

শাওন বলেন, “আমার মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান আছে। সন্ধ্যার দিকে বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হচ্ছিলাম। তখন নাসির আমাকে বলেন, ‘কোন দিকে যাবেন। আমিও সেদিকে যাবো, আমাকে নামিয়ে দিয়েন’। পথিমধ্যে সাদেক খান কাঁচামালের আড়তের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় একদল অস্ত্রধারী আরেক গ্রুপের লোকজন কে ধাওয়া করছিল।

তখন তাদের কয়েকজন বলছিল, ‘এই যে একজনকে পেয়েছি’, এই বলে আমাদের মোটরসাইকেলের পেছনে দৌড়ে এসে নাসিরকে কোপ দেয়। ভয়ে নাসির নেমে দৌড় দেয়, পরে তারাও পিছু নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। আমি এগিয়ে গিয়ে প্রতিবাদ করায়, আমাকেও মারধর করে। পরে তাকে উদ্ধার করে সিকদার মেডিকেল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এলে রাত ৮টায় মারা যায়।”

তিনি আরও বলেন, “কাঁচামালের আড়তের ভেতরে দেখা গেছে বেশকিছু ছেলে ছুরি-দা হাতে। আরেক গ্রুপ বাইরে অবস্থান করছে। সেখান কিছু সময় পর পর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছিল। সেখানকার আড়তদারের কাছে জিজ্ঞাসা করলেই খবর পাবেন।”

নিহতের বড় ভাই ইসলাম বিশ্বাস বলেন, “আমার ভাই লেবার-সুপারভাইজারের কাজ করতো। বিকেলে সে বাসা থেকে বের হয়। পরে খবর পাই, তাকে ১০ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী কুপিয়েছে। এসে গুরুতর আহত অবস্থায় পাই, ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।”

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আলম বলেন, “নাসিরের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় জরুরি বিভাগের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে মারা যান।”