সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলের বিছানাজুড়ে টাকা, ছবি ভাইরাল
সাবেক রেলপথ মন্ত্রী এবং কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের বিছানায় ছড়িয়ে থাকা টাকার বান্ডিলের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে সামাজিম মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছবিটি ভাইরাল হতে থাকে। তবে ছড়িয়ে পড়া ওই ছবিটি কবেকার সেটি জানা সম্ভব হয়নি।
এতে দেখা যায়, মুজিবুল হকের স্ত্রী দাঁড়িয়ে আছেন পাশে। বিছানায় বসে আছে তাদের তিন শিশু সন্তান। সন্তানদের সামনে ৫০০ এবং ১০০০ টাকা নোটের কয়েকটি বান্ডিল পড়ে আছে। মুজিবুল হক তার এক সন্তানকে কোলে নিচ্ছিলেন। এক শিশু একটি শপিং ব্যাগে থাকা টাকার বান্ডিল নিয়ে খেলা করছে। দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য দেখছেন মুজিবুল হকের স্ত্রী হনুফা আক্তার।
ধারণা করা হচ্ছে, মুজিবুল হকের কোনো এক সন্তানের জন্মদিনের ছবি এটি। সন্তানের জন্মদিন উৎসবকে আরও আনন্দময় করতে কয়েক বান্ডিল টাকা ছড়িয়ে দেন বিছানায়। এ সময় মুজিবুল হকের খুব কাছের কেউ সেই ছবিটি তুলেছেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে যায়। তারে আগে জুলাই মাসেই সপরিবারে গা ঢাকা দেন চৌদ্দগ্রাম আসনের সাবেক এ সংসদ সদস্য। তার মোটোফোনটি বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মুজিবুল হক মুজিব চৌদ্দগ্রাম থেকে টানা তিনবারসহ মোট চারবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ ছিলেন। ২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সরকারের রেলপথ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নিজ দলের নেতা-কর্মীরা তার নামে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তুলেন। এমপি এবং মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি কুমিল্লা নগরীর কর ভবন এলাকায় নির্মাণ করেছেন আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি। নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকায় নির্মাণ করেছেন বাণিজ্যিক ভবন। নগরীতে নিজের বাড়িসংলগ্ন দারুস সাফিদ ও সিলভার ক্রিসেন্ট নামের দুটি ভবনে নিজের এবং ভাতিজার নামে কিনেছেন কয়েকটি ফ্ল্যাট। রাজধানীর ধানমন্ডিতে ৮ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট, তিনটি বিলাসবহুল জিপগাড়ি, ঢাকা উদ্যান এলাকায় চারতলা ও আগারগাঁও শাপলা হাউজিংয়ে রয়েছে তিনতলা বাড়ি। কুমিল্লার কোটবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসংলগ্ন স্থানে হোটেল ও ফিলিং স্টেশন রয়েছে। চৌদ্দগ্রামের মিয়ার বাজারে নির্মাণ করেছেন কাকরি টাওয়ার নামে বাণিজ্যিক ভবন। প্রায়ই তিনি সিঙ্গাপুর ও দুবাই পরিবারসহ বেড়াতে যান। সেখানে তার নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
মুজিবুল হক ৬৭ বছর বয়সে ে২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবরে হনুফা আক্তার রিক্তাকে বিয়ে করেন। তিনি ২০১৬ সালের মে মাসে ৬৯ বছর বয়সে প্রথম কন্যা সন্তানের বাবা হন। ২০১৮ সালের ১৫ মে তার জমজ সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে তিনি তিন সন্তানের জনক।