কে এই সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী?
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্বাচন জালিয়াতি এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা নিয়ে প্রায়ই জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাউসের প্রেস কনফারেন্সে প্রশ্ন করতেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের শেষ কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছেন তিনি। তবে তার এ পর্যায়ে যাওয়াটা মোটেও সহজ ছিল না। সাহসী সাংবাদিকতা করতে গিয়ে তৎকালীন সরকারের রোষানলে পড়ে দেশ ছাড়তে হয়েছিল তাকে।
মুশফিকুল ফজল আনসারী যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাস্ট নিউজ বিডি ডটকমের সম্পাদনার পাশাপাশি স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘের সদরদপ্তর ও হোয়াইট হাউজে দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তুলে ধরে নানা প্রশ্ন করতেন। এর আগে সাংবাদিকতায় সাহসী ভূমিকার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে ২০১৫ সালে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব ছিলেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এ ছাড়া দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনীতিক প্রতিবেদক ছিলেন তিনি। বার্তা সংস্থা ইউএনবিসহ আরও কয়েকটি মিডিয়ায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। বিশ্বব্যাংকের কনসালট্যান্টও ছিলেন। ব্রিটেনের দ্য টাইমস ও সানডে টাইমস পত্রিকায় ওয়ার্কএক্সিপিরিয়েন্স রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিতে একটি অনুষ্ঠান অ্যাঙ্কর করেছেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এনটিভিতে জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘হ্যালো এক্সেলেন্সি’ হোস্ট করেছেন। এতে রাষ্ট্রদূত এবং বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিরা থাকতেন। তিনি মানবাধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক। অ্যাম্বাসেডর উইলিয়াম বি মাইলাম সম্পাদিত বৈদেশিক নীতি ম্যাগাজিন সাউথ এশিয়া পারসপেক্টিভসেরও নির্বাহী সম্পাদক।
আরো পড়ুন: দেশে ফিরে সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী
ঢাকার আসার আগে মুশফিকুল ফজল আনসারী এক বার্তায় বলেন, ‘এতদিন পর দেশে ফিরবো ভেবে আমি রোমাঞ্চিত। দেশে প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধব, ছাত্র-শিক্ষক এবং সাংবাদিকদের সাথে আবার মিলিত হওয়ার অপেক্ষায় আছি। ছাত্র-জনতার সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মাধ্যমে দেশকে স্বৈরাচারী মুক্ত করা হয়েছে। গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারের পথ আজ প্রশস্ত হয়েছে। একজন নোবেল জয়ী অধ্যাপক দেশের ক্রান্তিকালীন অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছেন, জাতি হিসাবে এটা আমাদের গর্বের।’
কাজের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্বাচনী জালিয়াতি এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থাকে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছেন মুশফিক ফজল আনসারী। প্রায় এক দশক পর বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে সিজদায় লুটিয়ে পড়েন। তার ফেরা উপলক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহযোগিতায় শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাব এক সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সমাবেশের আয়োজন করছে বলে জানা গেছে।