১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৩

নিহত মাসুদের পরিবারের জন্য সহায়তা চাইল আওয়ামী লীগ

নিহত মাসুদের পরিবারের জন্য সহায়তা চাইল আওয়ামী লীগ  © সংগৃহীত

রাজশাহীর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত আব্দুল আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। গণপিটুনিতে নিহত ছাত্রলীগ নেতা চারদিন আগেই সন্তানের বাবা হয়েছেন। নিহত আবদুল্লাহ আল মাসুদের পরিবারের জন্য দলের সমর্থক ও নেতাকর্মীদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছে আওয়ামী লীগ।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ সহযোগিতা চেয়ে আহ্বান জানানো হয়। পেজে ব্যাংক হিসাব নম্বর ও মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ–নগদ) নম্বর দেওয়া হয়েছে। নম্বরগুলো মাসুদের স্ত্রী বিউটি আরা বেগমের বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সেখানে মোসা: বিউটি য়ারা বেগমের নামে সঞ্চয়ী হিসাব নং- ০২০০০২২৬৬৩৫০১, অগ্রণী ব্যাংক, বিনোদপুর শাখা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ; রাউটিং নম্বর: ০১০৭০০১৯০ এবং বিকাশ/নগদ: ০১৭৮৪৫৫৮৩৭০ দিয়ে অ্যাকাউন্ট নাম্বারটি মাসুদের সহধর্মিনীর নামে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

অবশ্য পোস্টের নিচে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কেন মাসুদের পরিবারকে সহায়তা করছে না? দলটির সম্পদশালী কোনো নেতা কেন মাসুদের পরিবারের দায়িত্ব নিচ্ছেন না? তাঁরা তো গত ১৫ বছরে অনেক অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন।

আর্থিক সহায়তা চেয়ে সন্ধ্যার দিকে ফেসবুকে এই পোস্ট দেওয়া হলে রাত ১টা পর্যন্ত চার হাজার ৮শ’র বেশি মন্তব্য পড়েছে।  

অনেকে শেয়ার করেছেন সেই পোস্ট। মেহেদী হাসান রুবেল নামে একজন মন্ত্রব্যের ঘরে লিখেছেন, গত ১৬ বছর বিরোধী দলে থেকেও জামায়াত-বিএনপি তাদের কোনো কর্মীর জন্য মনে হয় এভাবে বিকাশ নাম্বার দিয়ে সাহায্য চায়নি। ১৬ বছর সরকারে থেকে একেকজন নেতা হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়ার পরও একজন কর্মীর জন্য যদি বিকাশ নাম্বার দিয়ে সাহায্য চাওয়া লাগে, তাহলে এর চেয়ে খারাপ দৃষ্টান্ত আর হতে পারে না।

ফেসবুকে অনেকে পোস্ট দিয়ে তার পরিবার এবং পাঁচ দিনের ছোট শিশুর পাশে থাকার কথা জানিয়ে মোবাইলে টাকা পাঠানোর রশিদের ছবিও শেয়ার করেছেন।

উল্লেখ্য, শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে তিনি গণপিটুনির শিকার হন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, রাজশাহী বোয়ালিয়া থানার ওসি মাসুদ পারভেজ।

পুলিশ জানায়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে রাতে বিনোদপুর বাজারে মাসুদের ওপর হামলা হয়। পরে সেখানই গণপিটুনি দিয়ে প্রথমে মতিহার থানা পুলিশের কাছে দেয়। কিন্তু ওই থানায় ৫ আগস্টের সহিংসতার কোনো মামলা নেই। তাই তাকে বোয়ালিয়া থানায় আনা হয়, যাতে কোনো সহিংসতার মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। সেখান থেকে গুরুতর আহত হওয়ায় মাসুদকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বোয়ালিয়া থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মাসুদ। শারীরিক অবস্থা দেখে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে, গত ৩ সেপ্টেম্বর কন্যা সন্তানের বাবা হন মাসুদ। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) নবজাতক শিশুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে মাসুদ লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার। গত ৩-৯-২০২৪ তারিখে কন্যা সন্তানের পিতা হয়েছি। মহান আল্লাহর কাছে নেক হায়াত ও সুস্থতা কামনা করি। সকল আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধু-বান্ধবের কাছে আমার ও আমার মেয়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি।’