বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বেশি নিহত ঢাকায়, কম বরিশালে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ৬৪০ জন নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। যদিও গত বৃহস্পতিবার জমা দেয়া ওই প্রতিবেদনে প্রথমে ৬৩১ জনের মৃত্যুর তথ্য উল্লেখ করা হয়েছিল।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি এগার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। চট্টগ্রামে আহতের সংখ্যা দুই হাজার। ঢাকা বিভাগে নিহতে সংখ্যা সর্বোচ্চ। এ বিভাগে নিহত হয়েছেন ৪৭৭ জন। নিহতের সংখ্যা সবচেয়ে কম বরিশালে একজন। আর চট্টগ্রাম ও খুলনায় নিহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৩ ও ৩৯ জন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব ও কমিটির প্রধান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বলেন, ‘নিহতের সংখ্যা আরো বাড়বে। কারণ সাভারে যারা মারা গিয়েছিল এবং যাদেরকে কোন কাগজ ছাড়া দাফন করা হয়েছিল, তাদেরকে রিপোর্টিংয়ের সুযোগ দিতে হবে। ফলে আরো বাড়বে নিহতের সংখ্যা। এ সংখ্যা আজকে ৬৪০ জন।’
এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। এ ২১ দিনের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮১ জন মারা গেছেন। আন্দোলনে হতাহতদের পরিপূর্ণ তালিকা তৈরি করতে গত ১৫ অগাস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলে জানান তিনি।
হুমায়ুন কিবির বলেন, আহত ১৯ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে কিছু ব্যক্তি আছেন গুরুতর আহত। যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ইনডোরে ভর্তি ছিল সাড়ে সাত হাজারের মতো মানুষ।
আরো পড়ুন: কোটা সংস্কারের বিরোধিতা করে সমালোচনায় বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার সমিতি
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আহতদের মধ্যে ১৬ হাজার জনের বেশি সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্তত তিন হাজার জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি খসড়া তালিকা। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এর তথ্য আরও আপডেট করছেন। আরো তথ্য কালেক্ট করতে হবে। যেহেতু লোকগুলো চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে, তাই তাদের তথ্য কালেক্ট করতে হবে। ৫ তারিখ পর্যন্ত অনেকে সঠিক তথ্য দেয়নি।
তিনি আরো বলেন, ‘সব হাসপাতালে রেজিস্ট্রারও সেইম স্ট্রাকচারে মেইনটেইন করে না। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করেই তথ্যগুলো তৈরি করা হয়েছে। তবে প্রতি মুহূর্তেই এসব তথ্য বদলাবে। কম্পিউটারাইজড ডাটাবেইজের ধর্ম হচ্ছে একটা লাইভ ডাটা যখন ঢুকবে প্রতি মুহূর্তেই তা বদলাবে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেতে আরো মাস খানেক সময় লাগবে।
হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর আহত তিন হাজার ৪৮ জন। আঘাতের কারণে স্থায়ীভাবে শারীরিক অক্ষম হয়ে গেছেন অন্তত ৫৩৫ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম আন্দোলনে আহত ও নিহতদের তালিকা তৈরি করছে বলে জানান হুমায়ূন কবির। বিবিসি বাংলা।