০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৯

সিঁড়ি থেকে শিশু উদ্ধার, মা আটকে ছিলেন বন্যার পানিতে

ফেনীতে বন্যাকবলিত একটি ভবনের সিঁড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কাছে পৌঁছে দেন স্বেচ্ছাসেবীরা  © সংগৃহীত

ফেনীতে বন্যাকবলিত একটি ভবনের সিঁড়ি থেকে একটি শিশুকে উদ্ধার করে মায়ের কাছে পৌঁছে দেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোস্তাফিজুর এবং তার সঙ্গী। গত ২২ আগস্ট বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে শহরের বিভিন্নস্থানে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে ভয়াবহ এসব অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের।

সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সেদিন সকাল সাতটার দিকে তাঁরা নৌকা নিয়ে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছিলেন। ছয়তলা একটি ভবনের পঞ্চম তলা থেকে এক ব্যক্তি মোস্তাফিজদের ডেকে বলেন, তাঁর পাশের একতলা ভবনের সিঁড়ির ওপর একটি শিশু একা পড়ে আছে।

সাত-আট মাস বয়সী শিশুটির বাবা বাড়িতে ছিলেন না। মা শিশুটিকে সেখানে শুইয়ে রেখে বাইরে থেকে কিছু আনতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সাঁতার জানেন না। পানি বেশি হওয়ায় ফিরতে পারছিলেন না। তিনি পাশের একটি ভবনে আটকা পড়েন।

এরপর স্বেচ্ছাসেবীরা তখন সেখানে যান। সিঁড়িতে ছাদের কাছেই শিশুটি শুয়ে ছিল। স্বেচ্ছাসেবীরা তাকে মাথার ওপর তুলে নিয়ে এসে নৌকায় তোলেন। এরপর স্বেচ্ছাসেবীরা শিশুটির মাকেও খুঁজে বের করেন। শিশুটির মায়ের অনুরোধে তাদের শহরের প্রধান সড়কে পৌঁছে দেওয়া হয়। 

মোস্তাফিজুর বলেন, ‘একটানা ১২ ঘণ্টা উদ্ধারকাজ চালিয়ে আমরা যখন অনেক ক্লান্ত, তখনই শিশুটিকে আমরা উদ্ধার করি। তাকে উদ্ধার করতেই আমাদের মনে হচ্ছিল, সব ক্লান্তি যেন দূর হয়ে গেছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে বেশ শক্তি ফিরে পেয়েছিলাম। শিশুটি কান্না করছিল না, কিন্তু আমরা না গেলে হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে পানিতে ভেসে যেত।’

গত ২১ আগস্ট মোস্তাফিজুর ও তাঁর সঙ্গীরা যখন বন্যাদুর্গত ফেনী সদরে পৌঁছান, তখন মিজান রোডেই ছিল কোমরপানি। ভেতরের দিকের অবস্থা ছিল আরও ভয়াবহ। অনেক জায়গায় বাড়িগুলো একতলা পর্যন্ত ডুবে গেছে। সে রাতেই একটি নৌকা নিয়ে উদ্ধারকাজে নেমে পড়েন তাঁরা। শিশু, বৃদ্ধ, প্রসবব্যথায় ছটফট করা নারীসহ বিপদে পড়া বন্যার্তদের তাঁরা নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন।