২৯ আগস্ট ২০২৪, ১৬:০৫

উদ্ধার অভিযান ছাড়াই ভাঙতে হবে গাজী টায়ার্সের ভবন! এখনও নিখোঁজ ১৬০

ভবন পরিদর্শন শেষে বুয়েটের অধ্যাপক রাকিব আহসানসহ অন্যরা  © সম্পাদিত

গত রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত গাজী গ্রুপের টায়ার্স কারখানায় ঢুকে লুটপাট চালায় কয়েক’শ মানুষ। লুটপাটের সময় রাত ৯টার দিকে কারখানাটির ছয়তলা ভবনটির নিচতলায় আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুরো কারখানাসহ ভেতরে থাকা অন্তত ১০টি গাড়ি। এরপর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন ১৬০ জন। 

তবে আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে গাজী টায়ার্সের পোড়া ভবন পরিদর্শন শেষে বুয়েটের অধ্যাপক রাকিব আহসান জানান, ‘গাজী টায়ার্সের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ভেতরে উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব নয়’ তবে ভবনের বেজমেন্টে উদ্ধার অভিযান চালানো যাবে বলে মতামত দেন তিনি। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বেজমেন্টে অভিযান চালানো হয়। 

অধ্যাপক রাকিব আহসান জানান, ‘ভবনটি ভাঙতেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।’ এ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীবকে সঙ্গে নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ল্যাডার মেশিন দিয়ে ছাদের ওপরে ও বিভিন্ন ফ্লোর বাইরে থেকে পরিদর্শন করেন। 

সাংবাদিকদের অধ্যাপক রাকিব বলেন, ‘ভবনটিতে টানা তিন দিন ধরে থেমে থেমে আগুন জ্বলেছে। ভবনের অনেক দেয়াল এমনকি ফ্লোর ধসে পড়েছে। ছয়, পাঁচ এবং চারতলার ছাদ তিনতলার ওপর এসে পড়েছে। ভবনের বীমগুলো বেঁকে গেছে। এই অবস্থায় ভবন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এর ভেতরে প্রবেশ করে উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব নয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘প্রচুর দাহ্য পদার্থ ছিল ভবনে। দীর্ঘ সময় আগুন থাকায় ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো ভেতরে প্রচুর তাপ রয়েছে। আমরা ড্রোন ও মই দিয়ে চেক করে ভেতরে আগুনের উপস্থিতি দেখতে পেয়েছি। কিন্তু কোনো ডেডবডির সন্ধান পাইনি। তবে এই ভবনের বেজমেন্টে অভিযান চালানো সম্ভব। সেটা তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এই ভবন দাঁড়িয়ে থাকাটাও ঝুঁকিপূর্ণ। এর ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়াও খুব সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করতে হবে।’ 

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক আনোয়ারুল হক বলেন, ‘আমরা তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের ড্রোন ফুটেজে কোনো মরদেহের সন্ধান পাইনি। বুয়েট প্রতিনিধি দলসহ এক্সপার্টদের মতামত অনুযায়ী ওপরের ফ্লোরে অভিযান চালানো সম্ভব নয়। তবে আমরা ভবনের নিচের বেজমেন্টে অভিযান চালিয়েছি। সেখানে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।’

প্রসঙ্গত, অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে ভবনের গেটে নিখোঁজদের সন্ধান চেয়ে স্বজনদের ভিড় দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে ১৬০ জনের তালিকা তৈরি হলেও তা পরবর্তীতে অস্বীকার করে ফায়ার সার্ভিস। এরপর শিক্ষার্থীদের একটি তালিকায় উঠে আসে ১২১ জনের নাম। তবে গাজী টায়ার্স কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই ঘটনায় নিখোঁজ নেই।