কারাগারে গেলেন ৩৭৭ আনসার সদস্য
সচিবালয় অবরুদ্ধ করে ভাঙচুর ও হামলার মামলায় ৩৭৭ জন আনসার সদস্যকে কারাগারে পাঠানোর আদালতে দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৬ আগস্ট) ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আজ আনসার সদস্যদের আদালতে হাজির করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। রিমান্ড আবেদন না থাকায় তাদের আদালতের এজলাসে ওঠানো হয়নি। কিছু আনসার সদস্যের পক্ষে আইনজীবী মোরশেদ হেসেন শাহীন জামিনের আবেদন করেন। আদালত সে আবেদন নামঞ্জুর করেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে জানা গেছে, আজ আনসার সদস্যদের ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় শাহবাগ থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় ১৯১ জনকে, রমনা থানায় ৮৫ জনকে, পল্টন থানায় ৯৫ জনকে এবং বিমানবন্দর থানার একটি মামলায় ৬ জনকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। চার থানার মামলায় অন্তত ৪২৬ জন এজাহারনামীয় আসামি। মামলাগুলোয় আসামিদের বিরুদ্ধে কয়েকটি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, চাকুরি জাতীয় কারণে দাবিতে বাংলাদেশ সচিবালয় অবরোধ করে থাকা আনসার সদস্যদের সঙ্গে গত ২৫ আগস্ট রাত ৯টার দিকে বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে আনসার সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় কিছু আনসার সদস্যরা পল্টন মডেল থানাধীন জিরো পয়েন্ট এলাকায় চাকরি জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজপথ অবরোধ করে রাখে। এ সময় পুলিশ তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তারা অনুরোধ অমান্য করে রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা তাদের দাবি-দাওয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাধারণ আনসারদের পক্ষে কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে তাৎক্ষনিক বৈঠক করেন এবং আংশিক দাবি পূরণ করেন। এছাড়া অন্যান্য যৌক্তিক দাবিগুলো একটি কমিটি গঠন করে দ্রুত বাস্তবায়নে আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু সাধারণ আনসাররা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে সচিবালয়ের চারপাশে অবস্থান করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং জিরো পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবরোধ করে দাবি দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবে মর্মে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
বাংলাদেশের সাধারণ আনসাররা একটি সু-শৃঙ্খলিত আনসার বাহিনীর সদস্য। বাংলাদেশ সচিবালয় রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা কেপিআই জানা সত্ত্বেও আনসার সদস্যরা কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে অবস্থান করতে থাকে। একপর্যায়ে রাত্র ৯টা ৩০ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থলে আসলে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অসংখ্য পথচারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা গুরুতর আহত হয়। উক্ত আনসার সদস্যরা রাস্তার ওপর আগুন ধরিয়ে দেয় এবং রাস্তায় চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা, অগ্নি-সংযোগ ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ী ভাঙচুর করে।