‘৩৬ দিনের গণঅভ্যুত্থানেও সচিবালয় ব্লকেড করিনি, কারণ সেখান থেকে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়’
সচিবালয়ে সমন্বয়কসহ শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকহাজার শিক্ষার্থী। রবিবার (২৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টায় সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ সমাবেশ করেন তারা।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে আটকে রেখে পরবর্তীতে হামলা করে আনসার বাহিনীর সদস্যরা। শিক্ষার্থীরা দুই সমন্বয়ককে আনতে গেলে শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ ও ইটপাটকেল ছোড়ে আনসার বাহিনী; এতে ৩০ জনের অধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হb। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বিক্ষোভ সমাবেশে আবুবাকের মজুমদার বলেন, গণঅভ্যুত্থানের শক্তি এখন রাজপথ ছাড়েনি। দিল্লিতে বসে শেখ হাসিনা যে ষড়যন্ত্র করছে এ গণঅভ্যুত্থানের শক্তি এ সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত। আমরা দেখেছি এই গণঅভ্যুত্থানের সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ষড়যন্ত্র করে তারা পার পাবে না। যারা আজ আমার ভাইয়ের উপর হামলা করেছে তাদের প্রত্যেকের আইনের আওতায় আনা হবে।
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমার ভাইয়ের গায়ে যারা হাত দিয়েছে, তাদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এদের সাহস কি করে হয় আমাদের ভাইদের রক্তাক্ত করার! এই আওয়ামী শকুনদের বলে দিতে চাই, নানা রঙে সচিবালয়ের আশেপাশে আজকের পর থেকে যারা অবরোধ কায়েম করবে, তাদেরকে ছাত্রজনতা দেখে নেবে।
৩৬ দিনের গণঅভ্যুত্থানে আমরা কখনো সচিবালয় ব্লকেড করিনি। কারণ সেখান থেকে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। এই গণঅভ্যুত্থানের ২০দিন যেতে না যেতেই যারা অধিকারের নামে ভণ্ডামি করে সচিবালয়ে ব্লকেড করে তারা শকুনদের দালাল। খুনি হাসিনাদের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আমরা সর্বোদা প্রস্তুত।
এদিকে ঘটনার পর নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেছেন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি লিখেন, ‘কোন ষড়যন্ত্রই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে যথেষ্ট হবে না। জুডিশিয়াল ক্যু, পথভ্রষ্ট আনসার ক্যু এর উদাহরণের পরেও যদি সাবধান না হোন তবে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে‘। মাত্র এক ঘন্টার এর পোস্টে প্রায় ১ লাখ রিয়্যাকশন এসেছে। যাতে মন্তব্য এসেছে প্রায় ৭ হাজার। যাতে ওয়ালিউল নামে একজন লিখেছেন, ‘বিদ্রোহী আনসারদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশের এই ক্রান্তিকালে আর কোন দাবি দাওয়া নয়। সবাই বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ান। দেশ গঠনে ভূমিকা রাখেন।’
এর আগে আরেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আজ ঐক্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা আনসারদের সব দাবি-দাওয়া মেনে নেব বলে আশ্বাস দিয়েছিলাম। এর জন্য আমরা সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু এরপরেও তারা সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে খবর পেয়ে ছাত্ররা তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। তিনি বলেন, 'এটা একটা বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ মনে হচ্ছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’