২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৮:০৭

পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পূর্বাভাস দেয়নি কোনও পক্ষ

ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা  © বিবিসি বাংলা

হঠাৎ করেই ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশের পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলা। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাঘে প্রবল বর্ষণ ও প্রলংঙ্কারী এ বন্যার কোনও আগাম পূর্বাভাস ছিল না। গত ১৮ আগস্ট শুধু নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কথা বলেছিল বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। আর ভারতও এমন তথ্য জানানো হয়নি। ফলে ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়েছে বাংলাদেশের গোটা একটি অঞ্চল।

জানা গেছে, ভারতে বড় ও আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা থাকলে তা জানানোর চর্চা যৌথ নদী কমিশনের রয়েছে। মুহুরী নদীর উজানে ভারতের নদী বিলুনিয়াতে তিন দিনে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে। পানির উচ্চতা বেড়েছে। কিন্তু ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে কোনো বিশেষ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি। ভারতের তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গা অববাহিকায় ভারী বৃষ্টি হলে তিন থেকে সাত দিন পরে ভাটিতে বাংলাদেশে আসে। 

এরপর মৌসুমি বন্যা হয়। তবে ত্রিপুরায় ভারী বৃষ্টির পাঁচ থেকে আট ঘণ্টার মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে এসেছে। এমন জরুরি পরিস্থিতিতে ভারতের তথ্য জানানো উচিৎ হলেও তারা জানায়। এ ব্যাপারে দুই দেশের চুক্তি হওয়া উচিত বলে মত সংশ্লিষ্টদের। গত ১৯ আগস্ট থেকে তিন দিন পূর্বাঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে, যা ৫৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। হঠাৎ অতিবৃষ্টি ও ঢল এবং পানি নামার পথ সংকুচিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগস্ট মাসে পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হয় না। মাসের শেষ দিকে টানা বৃষ্টি হলেও উপকূলীয় এলাকা থেকে মধ্যাঞ্চলে থাকে। আগস্টে আগেও ফেনী ও কুমিল্লায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে, তবে স্থায়ী হয়নি। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। 

আরো পড়ুন: হালদার বাঁধ ভেঙে হু হু করে পানি ঢুকছে লোকালয়ে

ফেনীর পরশুরামে গত ২০ আগস্ট ৩০৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা ৫৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। কুমিল্লায় ২৪ ঘণ্টায় ১৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা ১৯৬৮ সালের পর সর্বোচ্চ। ভারতের বিলোনিয়া নদীতে ২৪ ঘণ্টায় ১৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের ৫৪টি যৌথ নদীর পানি ও বন্যার তথ্যবিনিময় করা গেলে এবং বন্যার পূর্বাভাস উপস্থাপন করা গেলে বিপর্যয় হতো না বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরকার উদয় রায়হান গণমাধ্যমকে বলেন, গোমতী ও মাতামুহুরী নদীর ভারতীয় অংশে পানি বৃদ্ধির তথ্য তাদের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া যায়। তারাও দিনে দুবার তথ্য দেয়। কিন্তু এবার বিস্তারিত তথ্য জানায়নি। তথ্য না পেলে বন্যার বিস্তারিত ও সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন।