কুমিল্লায় নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ও টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ কুমিল্লার গোমতী, সালদা, কাঁকড়ি ও ডাকাতিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীর তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত দুদিন ধরে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে জেলার গোমতী নদীর সদর উপজেলা, বুড়িচং, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, তিতাস উপজেলা, কাঁকড়ি নদীর তীরের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা এবং ডাকাতিয়া নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে নাঙ্গলকোট, লালমাইয়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এসব এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। পাশের ফেনী জেলার ভয়াবহ বন্যার প্রভাবে চৌদ্দগ্রামসহ নাঙ্গলকোট ও লালমাই উপজেলার একাংশে এখন পর্যন্ত কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন।
পানিবন্দি সেসব মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়াও তাদের জন্য শুকনো খাবার, স্যালাইন ও জরুরি ওষুধ সরবরাহ করছে প্রশাসন। এসব এলাকায় সহায়তা সেল খুলেছে সেনাবাহিনী।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নসহ লালমাইয়ের অনেক অঞ্চলে এখনো ত্রাণ পৌঁছায় নি। এছাড়া মসজিদ, স্কুল-মাদ্রাসায় মানুষের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। বাজারের প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য ফুরিয়ে গেছে। পাওয়া যাচ্ছে না গ্যাস সিলিন্ডার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান ওয়ালিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, এই মুহূর্তে গোমতী নদীর পানি ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা পানিতে গোমতীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে নদীর বেড়িবাঁধের কোথাও ক্ষতি হয়নি।
তিনি বলেন, বাঁধ রক্ষায় সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, পাউবো, উপজেলা প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা কাজ করছেন।
কুমিল্লা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী গণমাধ্যমকে বলেন, জেলায় বুধবার পর্যন্ত ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ (বৃহস্পতিবার) আরও কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র বাড়তে পারে। বন্যা দুর্গতদের চাল ও শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।