আজ ১৫ আগস্ট, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের কী খবর?
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি সংলগ্ন সড়ক ও আশেপাশের এলাকা দখলে নিয়ে রেখেছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৬টায় উপস্থিত হয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এ সময় ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সকাল সাড়ে ৮টায় এই অবস্থাই ছিল।
শুক্রাবাদ মোড় থেকে ৩২ নম্বর ও মেট্রো শপিং মলের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা। একটু পর পর মিছিল নিয়ে বের হচ্ছে, ধানমন্ডি ২৭ ঘুরে আবার ৩২ এসে জড়ো হচ্ছেন অনেকে। আবার ধানমন্ডি ৩২ লেক পাড়ও ছাত্রদের দখলে রয়েছে। তাদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি ও পাইপ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা ৩২ নম্বরের সামনে অবস্থান করছেন। এছাড়া বেশ কিছু পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্য মেট্রো শপিং মল মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আওয়ামী লীগের কোনো নেতৃবৃন্দকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে দেখা যায়নি। তবে দুই-এক জন নেতাকর্মী কালো পোশাকে আসলে তাদের ধাওয়া করতে দেখা যায় ছাত্রদের। কোনো ব্যক্তিকে সন্দেহ হলে ছাত্ররা মোবাইল ফোন তল্লাশি করে দেখেন।
এর আগে অভিযোগ এসেছে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীসহ অনেকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট স্মরণে বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে শহীদ বেদীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বালন করে শ্রদ্ধা জানান শতাধিক মানুষ। বিকাল থেকেই সব হত্যার বিচারের দাবিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সমানে অবস্থান নেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কয়েকশ মানুষ মোমবাতি নিয়ে আসেন সেখানে।
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তৈরি করা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলায় বেদীতে বঙ্গবন্ধুর একটি বড় ছবি রেখে তারা এই শ্রদ্ধা জানায়। মোমবাতি হাতে তাদেরকে স্লোগান দিতে দেখা যায়, ‘এক মুজিব লোকান্তরে লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে’, ‘পিতা তোমায় দেখা যায়, লাল সবুজের পতাকায়’, ‘শেখ শেখ শেখ মুজিব, লও লও লও সালাম’। এর পরপরই একদল যুবককে লাঠি নিয়ে এসে রোকেয়া প্রাচীসহ উপস্থিত কয়েকজনের উপর হামলা করে। তারা রোকেয়া প্রাচীকে মারতে মারতে যুবকেরা ৩২ থেকে বের করে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
এর আগে মোমবাতি হাতে নিয়ে রোকেয়া প্রাচী বলেন, “আমরা সবাই আজকে এখানে একত্রিত হয়েছি। কারণ আমাদের বাংলাদেশ পুড়েছে, আমাদের ১৯৭১ পুড়েছে। “আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি কারণ আমাদের বঙ্গবন্ধুর ছবি পুড়েছে। ধানমন্ডির ৩২ পুড়েছে। আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি বাংলাদেশ পুড়েছে বলে। আমরা এখানে কোনো রাজনীতির কথা বলতে আসিনি। বাংলাদেশ আমাদের সবার।”