দেশের বিমানবন্দরগুলোর পূর্বের নাম ফেরানোর দাবি বেবিচক কর্মচারীদের
দেশের সব বিমানবন্দরগুলো আগের নামে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মচারীরা। একই সঙ্গে রেমিট্যান্স যোদ্ধা ও বিমানবন্দরের যাত্রীদের ‘স্যার’, ‘ম্যাডাম’ সম্বোধন করার আদেশ চান তারা। রবিবার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কর্মচারী ফোরাম এ বিষয়ে চেয়ারম্যানকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন।
স্মারকলিপির মধ্যে মোট ১২টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে—বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নাম পূর্বে যা ছিল তা প্রতিস্থাপন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ আবু সাঈদ বিমানবন্দর’ রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
পাশাপাশি রেমিট্যান্স যোদ্ধাসহ সম্মানিত যাত্রী সাধারণকে বিমানবন্দরে কর্মরত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী যাতে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করে এই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করতে হবে। বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি বন্ধে ও সেবা কার্যক্রম অধিকতর মানবীয় করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করার নিমিত্ত বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিধিবহির্ভূতভাবে বাহিনীর পাইলটদের বাণিজ্যিক ফ্লাইটে সুযোগ দিতে নানা কৌশল বিমানের
স্মারকলিপিতে জানানো হয়েছে, বিগত ১৬ বছরে বেবিচকের যে সকল চিহ্নিত কর্মকর্তা-কর্মচারী জোটবদ্ধভাবে কর্তৃপক্ষের স্বাভাবিক কাজে বাধা দানের জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মাধ্যমে সিভিল অ্যাভিয়েশনের বিভিন্ন কর্মকর্তার নামে রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে পত্র প্রেরণ ও তদবির-সহ কর্তৃপক্ষের কাজে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করেছে তাদেরকে অনতিবিলম্বে চাকরি হতে অব্যাহতি দিয়ে সার্বিক ভাবে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
যাদেরকে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে, অনতিবিলম্বে তাঁদের পদোন্নতি প্রদান করতে হবে এবং যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করতে হবে। বর্তমানে চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নকরণের পূর্বেই বিগত ৫ বছরে যারা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও শুধুমাত্র গোয়েন্দা রিপোর্টের কারণে চাকরি পায়নি সে সকল হতভাগাদের তালিকা করে তাঁদের নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। এ লক্ষ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
আরও পড়ুন: ছাত্রদল নেতাদের নেতৃত্বে ইউজিসিতে ‘ক্যু’, সচিবকে অপসারণ: ফেরানো হয়েছে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িতদেরও
স্মারকলিপিতে বলা হয়, বেবিচকের যোগ্য কর্মকর্তাদের কর্তৃপক্ষের ‘সদস্য’ পদে নিয়োগের বিধান চালু করতে হবে। নির্বাহী পরিচালক পর্যন্ত সিভিল অ্যাভিয়েশনের সকল পদে কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদায়ন নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশ ভ্রমণের সরকারি আদেশ মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে অত্র কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারির নিমিত্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সিভিল অ্যাভিয়েশনের সকল কার্যক্রম যাতে অত্র কর্তৃপক্ষের আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয় এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কর্তৃপক্ষের নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ, আবাসন, আর্থিক ও জনবল কাঠামো সংক্রান্ত বিদ্যমান অসংগতি দূরীকরণে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলেও দাবি ছিল বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কর্মচারী ফোরামের। এরপর সংস্থাটির চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার পক্ষে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেছেন বেবিচক চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মোহাম্মদ সোহেল কামরুজ্জামান।