ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে অভিভাবকদের কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা
চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতে শিক্ষার্থীদের নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সামনে ‘মৌন অবস্থান’ কর্মসূচি করতে গিয়েছিলেন একদল অভিভাবক। কিন্তু পুলিশের বাধার কারণে তারা কর্মসূচি পালন করতে পারেননি।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢামেকে বাগান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে অভিভাবকেরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কয়েকটি ওয়ার্ডে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেন। বিক্ষুব্ধ এই অভিভাবকেরা আগামী শনিবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।
অভিভাবকদের এই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলনের (শিশির) আহ্বায়ক রাখাল রাহা ও বাংলাদেশ সচেতন অভিভাবক সমাজের আহ্বায়ক আবু মুসলিম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা মেডিকেলের সামনে অভিভাবকদের এই কর্মসূচির খবর পেয়ে সকাল থেকেই হাসপাতাল এলাকায় অবস্থান নেন পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য। শিশিরের আহ্বায়ক রাখাল রাহা বলেন, কর্মসূচি পালন করতে ঢাকা মেডিকেলের বাগান ফটকের সামনে গেলে পুলিশের শ খানেক সদস্য এসে আমাদের বাধা দেন। ১০ মিনিটের জন্য দাঁড়ানোর কথা বললেও তাঁরা দাঁড়াতে দেননি। তাঁরা প্রায় আমাদের গায়ের ওপর এসে পড়েন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আমরা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলি। পুলিশের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তাঁদের অসহযোগিতায় আমরা কর্মসূচি করতে পারিনি।
রাখাল রাহা আরও বলেন, আমরা বাধা উপেক্ষা করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাই। ১০১ নম্বর ওয়ার্ডসহ বেশ কিছু ওয়ার্ড পরিদর্শন করি। ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে থাকা ৮০ শতাংশ আহত ব্যক্তিই বুলেটে বিদ্ধ। তাঁদের মা-বাবা করুণ অবস্থার কথা জানালেন। পরে হাসপাতালের আবাসিক সার্জনের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি। তিনি আহত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসার কথা বললেন।
তিনি বলেন, আমরা অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতার কথা বললে তিনি হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে তাঁর মাধ্যমে দেওয়ার কথা বললেন; কিন্তু আমরা বিকল্প উপায়ে তাঁদের সহযোগিতা করার কথা ভাবছি।
আগামী শনিবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি করা হবে বলে জানান রাখাল রাহা। তিনি বলেন, এই কর্মসূচি আর মৌন হবে না। এটি হবে সরব অবস্থান কর্মসূচি।
বাধার বিষয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের সামন মানববন্ধন করার জায়গা নয়। এতে রোগীদের দুর্ভোগ হতে পারে। এ জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের অন্য কোথাও গিয়ে মানববন্ধন করতে বলেছেন।