পরিবারের হাল ধরতে ঢাকায় এসেছিলেন, ওষুধ কিনতে গিয়ে গুলিতে নিহত সাব্বির
রাজধানীর উত্তরা-আজমপুর এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত হয়েছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মীর্জাপুর গ্রামের সাব্বির হোসেন (২৩)। তিনি উত্তরার ১৩ নং সেক্টরে অর্গান লিমিটেড কেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।
নিহত সাব্বির হোসেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মীর্জাপুর গ্রামের আমোদ আলীর ছেলে। কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় গত ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় ওষুধ কিনতে বেরিয়ে গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। পরিবারের বড় সন্তান সাব্বির হোসেন পরিবারের হাল ধরতে উপার্জনের আশায় ঢাকায় এসেছিলেন তিনি।
নিহতের চাচাতো ভাই তরিকুল ইসলাম জানান, তিনি উত্তরা-আজমপুর এলাকায় পৌঁছালে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। এ সময় সাব্বিরের গলায় গুলি লাগে। আহত সাব্বিরকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট মিজানুর রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো জানান, ঢাকায় তার আরো দুই চাচাতো ভাই রয়েছেন। তারা হলেন মুনিম ও লিংকন। সাব্বির নিহত হওয়ার খবরটি তারাই বাড়িতে জানায়। লাশ ঝিনাইদহে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি জানান।
মৃত্যুর পরদিন ১৯ জুলাই তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
সাব্বিরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, আমোদ আলী ও রাশিদা খাতুনের তিন সন্তানের মধ্যে সাব্বির ছিলেন সবার বড়। সুমাইয়া খাতুন ও সাদিক হোসেন নামে সাব্বিরের ছোট দুই ভাইবোন আছে। বাবা আমোদ আলীর নিজের কোনো কৃষিজমি নেই। অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালান তিনি। তার পরিবারের হাল ধরতে সাব্বির চলে আসেন ঢাকায়।
তার বাবা আমোদ আলী বলেন, আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করত না। বাঁচার জন্য টাকা উপার্জন করতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। সেখানেও সে কোনো মিছিল-মিটিংয়ে যায়নি। জ্বর হওয়ায় অসুস্থ শরীরে ওষুধ কিনতে বাইরে যায়। তাকে কেন গুলি করে মারা হলো। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।