কোটা বিরোধী নেতাদের ‘বীর মুক্তিসেনা’ বললেন জি এম কাদের
কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করছি। এই যৌক্তিক আন্দোলনে সশস্ত্র বাধাদানের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। কোটা বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী তরুণদের প্রতি আমার অভিনন্দন। তাদেরকে আমি ‘বীর মুক্তিসেনা’ হিসেবে অভিহিত করতে চাই।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী প্রেরিত এক বিবৃতিতে আরো বলা হয়ঃ বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে সুদীর্ঘকাল থেকে বৈষম্যের মাধ্যমে সৃষ্ট বঞ্চনা, নিপীড়ন, নির্যাতন ও দারিদ্রের অভিশাপ প্রচলিত ছিল। বৈষম্যের এই অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভের জন্য তারা বারবার সংগ্রাম করেছেন, অনেকে আত্মদান করেছেন এবং বারংবার বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু, তাদের সেই বিজয় প্রতিনিয়ত ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।
জি এম কাদের বলেন, বৃটিশ আমলে উপনিবেশিক শাসকরা দেশে সুবিধাভোগী জমিদার শ্রেনী এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী দ্বারা বাঙগালী জাতিকে শোষন ও লুন্ঠন করেছে। পরবর্তীতে বাঙালী জাতি পাকিস্তান সৃষ্টির মাধ্যমে এই বৈমষ্য থেকে মুক্ত হতে চেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানীরাও সে বিজয়কে ছিনিয়ে নেয়। বাঙালী জাতি আবার পাকিস্তানী শাসকদের দ্বারা সৃষ্ট বৈষম্য ও তার মাধ্যমে, শোষন, বঞ্চনা, অন্যায়, অবিচার ও দারিদ্রের শিকার হতে থাকেন। ফলশ্রুতিতে স্বাধিকার আন্দোলন এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতাযুদ্ধের মাধ্যমে এই বৈষম্য থেকে মুক্ত হয়েছিল বাঙালী জাতি।
কিন্তু সেই মুক্তিযুদ্ধের অর্জন এখন আবার তারা হারাতে বসেছেন। জি এম কাদের মনে করেন, বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দেশে আবার বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই বিভাজনের মাধ্যমে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠী তৈরী করা হচ্ছে। কোটা পদ্ধতি সেই প্রক্রিয়ার একটি অংশ মাত্র।
তিনি বলেন, বর্তমান শাসক শ্রেনী, সরকারসৃষ্ট এই সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর মাধ্যমে দেশের জনগনকে শাসন শোষন করে চলেছেন। সামনের দিনগুলোতেও এ উদ্দেশ্য আরো ব্যাপকভাবে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। কোমলমতি তরুণ সমাজ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। সেই কারণে আমি তাদের বৈষম্য মুক্তির এ সংগ্রামের বীরযোদ্ধা বা বীর মুক্তিসেনা বলে মনে করছি।
মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ব্যবহার বা অপব্যবহার করে তাদের যেভাবে কলংকিত করা হচ্ছে, তাতে করে আশংঙ্কা হয়- ভবিষ্যতে কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে সংকোচ বোধ করতে পারেন।
কোটাবিরোধী আন্দোলনের দাবী সমূহ নীতিগতভাবে মেনে নেয়ার আহবান জানাচ্ছি। সে লক্ষ্যে পরবর্তী করনীয় ঠিক করা যেতে পারে ও সে বিষয়গুলো আন্দোলনরত ছাত্র/ছাত্রীদের জানানো যেতে পারে। অন্যথায়, দেশ ও আগামী প্রজন্ম একটি সংঘাতময় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে আশংঙ্কা করছি। মনে রাখতে হবে, অযৌক্তিক জেদ কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।