মুক্তিযুদ্ধের অবমাননাকারীদের শাস্তি দাবি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির
আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার অবমাননাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সোমবার ১৫ জুলাই এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি কোটাপদ্ধতি বাতিলের জন্য আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী সমাজ। ২০১৮ সালে সরকারের কোটাপদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিলেন। গত ৫ জুন হাইকোর্ট নির্দেশনা দেয় যে, কোটাপদ্ধতি বাতিল সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এরপর থেকেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি লক্ষ্য করেছে, এই আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে অপমান-অপদস্ত করছে। শুধু তাই নয়, গত ১৪ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের রাজাকার দাবি করার যে কুৎসিত বহিঃপ্রকাশ দেখিয়েছে, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিলের যে দাবি আন্দোলনকারীরা তুলেছে, তা নিঃসন্দেহে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮(৪) এবং ২৯(৩)(ক) অনুচ্ছেদের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে কোটাপদ্ধতি বহাল থাকতে হবে। পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রেই সরকারি চাকরি থেকে শুরু করে নাগরিক নানা সুযোগপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কোটাপদ্ধতি চালু আছে। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে কোটা ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। সেখানে চার ধরনের নাগরিকদের জন্য মোট ৪৯.৫ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত।
আরও পড়ুন: নতুন কর্মসূচি ঘোষণা কোটা সংস্কারপন্থী শিক্ষার্থীদের
তাছাড়া নেপালের সংবিধানে দলিত, আদিবাসী, নারীসহ অন্যান্য নাগরিকদের জন্য ৫৫ শতাংশ সাধারণ কোটা এবং ৪৫ শতাংশ সংরক্ষিত কোটা চালু আছে। পাকিস্তানে সরকারি চাকুরিতে ৯২.৫ শতাংশ কোটা বিভিন্ন প্রদেশের জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ নীতির আওতায় কেবল শিক্ষালাভ বা সরকারি চাকরিতেই নয়, বেসরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানেও কৃষ্ণবর্ণ, হিস্পানিক জাতি ও আদিবাসীদের জন্য কোটাব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে।
যে কোনো সভ্য রাষ্ট্রে নাগরিকদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের জন্য কোটা ব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে। সেক্ষেত্রে কোন যুক্তিতে আন্দোলনকারীরা কোটাপদ্ধতি বাতিলের দাবি জানাচ্ছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি মনে করে, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা যেতে পারে, কিন্তু কোনোভাবেই বাতিল করা যাবে না।
এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যারা মুক্তিযুদ্ধ ও একাত্তরের বীর শহীদদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য দিচ্ছে, নিজেদের ‘রাজাকার’ বলে স্লোগান দিচ্ছে, তা রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ করছে। তাদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি মমতাজউদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক অনুপম সেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুন নবী, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. কাজী কামরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. ফওজিয়া মোসলেম, শহীদজায়া সালমা হক, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক শফিকুর রহমান এমপি, সমাজকর্মী আরমা দত্ত এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আবেদ খান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী আবুল বারক আলভী, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, কথাশিল্পী ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীরপ্রতীক, ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীরউত্তম, মানবাধিকার নেতা উষাতন তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন, সমাজকর্মী মালেকা খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সঙ্গীতশিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাট্যজন মামুনুর রশীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ, অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূ-তত্ত্ববিদ মো. মকবুল-এ ইলাহী চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল খালেক, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজুল হক, এডভোকেট রাণা দাস গুপ্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরন নবী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্ত্তী জুয়েল, যাত্রাশিল্পী মিলন কান্তি দে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী কাজী কামাল ইকরাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর, মানবাধিকার নেতা কাজল দেবনাথ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠশিল্পী শাহীন সামাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কণ্ঠশিল্পী ডালিয়া নওশিন, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, পদ্মশ্রী সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, লালন সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী ফরিদা পারভীন, অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান, প্রফেসর ড. ইফতেখারউদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট মো. আজহার উল্লাহ ভূঁইয়া, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), ডা. ইকবাল কবীর, অধ্যাপক মো. আলমগীর কবীর, সমাজকর্মী কাজী মুকুল, শহীদসন্তান ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, শহীদসন্তান তানভীর হায়দার চৌধুরী শোভন, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, শহীদসন্তান শমী কায়সার, অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী, অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, এডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা।
শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, শহীদসন্তান নূজহাত চৌধুরী শম্পা, সাংবাদিক শওকত বাঙালি, অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল, লেখক ব্লগার মারুফ রসূল, অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব, ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু, সাংবাদিক হারুন আর রশিদ, সংস্কৃতিকর্মী কাজল ঘোষ, সংস্কৃতিকর্মী শামসুল আলম সেলিম, সমাজকর্মী আবু সাদাত মো. সায়েম, চারুশিল্পী ফুলেশ্বরি প্রিয়নন্দিনী, চলচ্চিত্রনির্মাতা ইসমাত জাহান, ছাত্রনেতা পলাশ সরকার, সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন, সংস্কৃতিকর্মী বাহাউদ্দিন গোলাপ, ছাত্রনেতা আশেক মাহমুদ সোহান, সমাজকর্মী কেশব রঞ্জন সরকার, এডভোকেট দীপক ঘোষ, সমাজকর্মী এ, বি, এম মাকসুদুল আনাম, এডভোকেট মালেক শেখ, সমাজকর্মী কামরুজ্জামান অপু, ছাত্রনেতা হারুণ অর রশিদ, ছাত্রনেতা অপূর্ব চক্রবর্তী।
লেখক আলী আকবর টাবি, চলচ্চিত্রনির্মাতা লুবনা শারমিন, সহকারী অধ্যাপক শরীফ নুরজাহান, সাংবাদিক সুশীল মালাকার, চারুশিল্পী শেখ শাহনেওয়াজ আলী পরাগ, সাংবাদিক আবু সালেহ রনি, চলচ্চিত্রনির্মাতা সাইফ উদ্দিন রুবেল, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, ড. তপন পালিত, ব্লগার অমি রহমান পিয়াল, চলচ্চিত্রনির্মাতা পিন্টু সাহা, সমাজকর্মী হাসান আব্দুল্লাহ বিপ্লব, এডভোকেট রত্নদীপ দাস রাজু, সাংবাদিক সাইফ রায়হান, সমাজকর্মী শিমন বাস্কে, আবৃত্তিশিল্পী মো. শওকত আলী, শহীদসন্তান সাংবাদিক জাহিদ রেজা নূর, এডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবু, সমাজকর্মী পূর্ণিমা রানী শীল, ড. তানজীর মান্নান রূপন, অনলাইন এক্টিভিস্ট এ.এস.এম শরিফুল হাসান, চারুশিল্পী ইফতেখার খান বনি, সমাজকর্মী আলমগীর কবির, সমাজকর্মী মো. হেলালউদ্দিন, সমাজকর্মী সুমনা লতিফ, সংস্কৃতিকর্মী শামস রশীদ জয়, ডা. সাদমান সৌমিক সরকার, আবৃত্তিশিল্পী আরেফিন অমল।
অধ্যাপক যোগেন্দ্রনাথ সরেন, মানবাধিকারকর্মী ফয়সাল হাসান তানভীর, সমাজকর্মী প্রাণতোষ তালুকদার, সমাজকর্মী আবদুল হালিম বিপ্লব, সমাজকর্মী কাজী রেহান সোবহান, সমাজকর্মী মো. আবদুল্লাহ, সমাজকর্মী আনোয়ার ইসলাম রানী, এডভোকেট আবদুল মালেক, সাংবাদিক দীলিপ মজুমদার, সংস্কৃতিকর্মী রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, সংস্কৃতিকর্মী সুচরিতা দেব, অনলাইন এক্টিভিস্ট এইচএম রিয়াজ আবীর, লেখক সাব্বির রহমান খান, মানবাধিকারকর্মী আনসার আহমেদ উল্লাহ, মানবাধিকারকর্মী খলিলুর রহমান, মানবাধিকারকর্মী স্বীকৃতি বড়ুয়া, লেখক চলচ্চিত্রনির্মাতা শাকিল রেজা ইফতি, ডা. একরাম চৌধুরী, গবেষক তাপস দাস, সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী।