১০ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩১

বাংলা ব্লকেডে যেসব এলাকায় তীব্র যানজট হতে পারে

কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আজ সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক  নাহিদ ইসলাম। এর ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলো তীব্র যানজটের কবলে পড়তে পারে।

বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের সড়ক-মহাসড়কের গুরুত্ব পয়েন্ট অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। এবার সব গ্রেডে ৫ শতাংশ কোটা রাখার দাবি জানানো হয়েছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের চলমান বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ জুলাই সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করা হবে। রেলপথ ও সড়কপথ এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকবে। দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের নিকটবর্তী সড়ক অবরোধের আহবান জানান তিনি। 

তিনি বলেন, ৫ জুন থেকে আন্দোলনে আছি। এই আন্দোলন শিক্ষাথীরা নিজ উদ্যোগে করেনি৷ হাইকোর্টের রায়ের কারণে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। অনেকে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা বলছেন। আমরাও চাই না সাধারণ মানুষের কোনো ভোগান্তি তৈরি হোক। কিন্তু এখনো নির্বাহী বিভাগের সাথে আমাদের কোনো আলোচনা বা আশ্বাস পাইনি। সংসদে আইন পাশের মাধ্যমে কোটা বৈষম্য নিরসনের কথা বলছি।

আন্দোলনের আরেক অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা কোটার বিরোধিতা করছি না। আমরা নুন্যতম মাত্রায় কোটার পক্ষে আন্দোলন করছি। অনেকেই আমাদের আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কি না সেটা নিয়ে আলোচনা করছেন। আমরা পরিষ্কার করে বলছি যে আমরা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যথেষ্ট সম্মান রাখি।

এদিকে কর্মসূচি ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলো তীব্র যানজটের কবলে পড়তে পারে। রাজধানী ঢাকায় যেসব এলাকায় ব্লকেড হতে পারে

১। শাহবাগ
২। কারওয়ানবাজার
৩। ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়
৪। ফার্মগেট
৪। চানখারপুল মোড়
৫। চানখারপুল ফ্লাইওভার এ উঠার মোড়
৬। বঙ্গবাজার
৭। শিক্ষা চত্বর
৮। মৎস্য ভবন
৯। জিপিও
১০। গুলিস্তান
১১। সায়েন্সল্যাব
১২। নীলক্ষেত
১৩। রামপুরা ব্রিজ
১৪। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক
১৫। মহাখালী
১৬। বাংলামোটর
১৭। পল্টন মোড়
১৮। সচিবালয়

ঢাকার বাইরে যেসব এলাকায় ব্লকেড হতে পারে

১। রাজশাহী (জিরো পয়েন্ট, ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট, রেলগেট, স্টেশনবাজার)
২। সিলেট-সুনামগঞ্জ রোড (সাস্ট)
৩। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়)
৪। বটতলা চত্বর (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
৫। ময়মনসিংহ (বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)
৬। রংপুর মডার্ন মোড় (বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়)
৭। দেওয়ান হাট (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজসমূহ) 
৮। খুলনা, নতুন রাস্তা, দৌলতপুর (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা আঞ্চলিক কেন্দ্র)
৯। গাজীপুর (আওয়ালে বদরে আলম সরকারি কলেজ, গাজীপুর )
১০। নোয়াখালী প্রেসক্লাব (নোয়াখালী জেলার শিক্ষার্থীবৃন্দ
১১। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে
১২। ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক (পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)
 
২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকার। পরে ২০২১ সালে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে এর বিরুদ্ধে রিট করেন। গত ৫ জুন হাইকোর্টের এক রায়ের মাধ্যমে আবারও ফিরে আসে কোটা ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন: ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল নয়, সংসদে আইন পাশেই সমাধান খুঁজছে কোটা আন্দোলকারীরা

এরপর গত ১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনে নামে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার রাজধানীর শাহবাগ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সে অনুযায়ী রোববার ও সোমবার টানা দুদিন বিকেলে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে অবস্থান ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নিজ নিজ এলাকা থেকে এ কর্মসূচি পালন করেন।