মতিউর রহমানকে ওএসডি, সরানো হচ্ছে সোনালী ব্যাংক থেকেও
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস এক্সাইজ ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মতিউর রহমানকে অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) করা হয়েছে। নতুন কর্মস্থল হিসেবে তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। একইসঙ্গে তার অপর একটি পদবি রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক পিএলসির পরিচালক থেকেও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
রবিবার (২৩ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব মকিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মতিউর রহমানের ওএসডির বিষয়টি জানানো হয়েছে। এছাড়া এদিন বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকেও মতিউর উপস্থিত ছিলেন না। চলতি সপ্তাহের মধ্যে তাকে এ পদ থেকে অপসারণ করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের আলহাজ আব্দুল হাকিম হাওলাদারের ছেলে মতিউর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করার পর এমবিএ করেন। শুরুতে ১৯৯০ সালে চাকরি নেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনে। পরে ১৯৯৩ সালে ১১তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ‘কাস্টমস ক্যাডার’ হিসেবে যোগ দেন এবং ২০১৫ সালে কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি পান।
মতিউর রহমান ব্রাসেলসে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর, চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার, ভ্যাট কমিশনারসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ তিনি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের (সিইভিটি) প্রেসিডেন্ট হিসেবে ছিলেন। এখন এ পদ থেকে তাকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত কোরবানির জন্য ১৫ লাখ টাকার ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। যদিও মতিউর ইফাতকে তার ছেলে হিসেবে অস্বীকার করেছেন। তবে অনুসন্ধানে তার এমন দাবির সত্যতা মিলেনি। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি এই কর্মকর্তা দুর্নীতির মাধ্যমে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।
এদিকে, মতিউর রহমান ও তার ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে তাকে তার সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে সোনালী ব্যাংককে মৌখিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মতিউর রহমান যেন পর্ষদে উপস্থিত না হন। ব্যাংকও মতিউর রহমানকে উপস্থিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং তিনিও তা মেনে নিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে মতিউর রহমানের বক্তব্য জানতে আজ সকালে তার মোবাইলে কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এবার কোরবানির ঈদে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে মতিউর রহমানের ছেলে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে উঠে আসে। এরপর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন; মতিউর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পটসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।