বায়ুদূষণে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে দুই হাজার শিশু
বায়ুদূষণের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার শিশু মারা যায়। এটি এখন বিশ্বব্যাপী অকালে মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহত্তম ঝুঁকির কারণ। বুধবার (১৯ জুন) হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউটের (এইচইআই) প্রকাশিত এ প্রতিবেদনের পঞ্চম সংস্করণে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে বায়ুদূষণের সংস্পর্শে ৮১ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যা সব মৃত্যুর প্রায় ১২ শতাংশ।
তামাক ব্যবহার ও দুর্বল খাদ্যাভ্যাসকেও ছাড়িয়ে গেছে বায়ুদূষণ। এটি উচ্চ রক্তচাপের পর অকালে মৃত্যুর জন্য দ্বিতীয় প্রধান ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠেছে। ছোট বাচ্চারা বায়ুদূষণের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের মার্কিন সংস্থাটির বার্ষিক স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার প্রতিবেদনের অংশীদার।
এ ছাড়া এ প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনপরিচালিত গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি থেকে দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলের ডাটা ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণ পাঁচ বছরের কম বয়সী সাত লাখেরও বেশি শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী। এর মধ্যে পাঁচ লাখেরও বেশি শিশুর মৃত্যুর জন্য কয়লা, কাঠ বা গোবরের মতো নোংরা জ্বালানি ব্যবহার করে ঘরের ভেতরে রান্না দায়ী। এসব মৃত্যুর অধিকাংশই হয়েছে আফ্রিকা ও এশিয়ায়।
হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউটের গ্লোবাল হেলথের প্রধান পল্লবী পান্ত বলেন, ‘এগুলো এমন সমস্যা, যা আমরা জানি যে সমাধান করা সম্ভব।’
প্রতিবেদনটিতে আরো দেখা যায়, বিশ্বের প্রায় প্রত্যেকেই প্রতিদিন অস্বাস্থ্যকর মাত্রার বায়ুদূষণে শ্বাস নেয়। ৯০ শতাংশেরও বেশি মৃত্যু পিএম ২.৫ নামের ক্ষুদ্র বায়ুবাহিত দূষণের সঙ্গে যুক্ত। পিএম ২.৫ নিঃশ্বাসে ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
প্রতিবেদনটির উদ্দেশ্য ছিল বায়ুদূষণের মাত্রার সঙ্গে এ ধরনের রোগের হারকে যুক্ত করা।
কিন্তু এমন ভয়াবহ পরিসংখ্যান সত্ত্বেও প্রতিবেদনটি এখনো বায়ুদূষণের প্রভাবকে অবমূল্যায়ন করতে পারে বলে পান্ত জানান। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, বায়ুদূষণ কিভাবে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য, নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ বা তাপের জন্য শুষ্ক জ্বালানি ব্যবহারে কী প্রভাব ফেলতে পারে তা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবী উষ্ণ হওয়ায় ওজোন দূষণ আরো খারাপ হতে পারে। ২০২১ সালে প্রায় এটি পাঁচ লাখ মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিল।