বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেল নেটওয়ার্ক পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ
বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাকি অংশের সাথে যুক্ত করতে রেলপথে যোগাযোগ গড়ে তোলার ভারত সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার (১৮ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির উদ্বেগের কথা জানানো হয়। এই উদ্যোগ দেশের গোয়েন্দা ব্যবস্থাকে দুর্বল করবে বলে দাবি করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘শিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে ২২ কিলোমিটার পথ বাইপাস করে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে (যা সাধারণত ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত) রেললাইন বসানো হবে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ড বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহনের জন্য রেল যোগাযোগ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, “নিশ্চয়ই বাংলাদেশের ‘ডামি সরকারের’ প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই এসব ঘটনা ঘটছে। এটা উদ্বেগজনক। আমরা এ ধরনের উদ্যোগের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জমি ব্যবহার করে ট্রেন চালাতে চায় ভারত
তিনি বলেন, ‘যে ভারত প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা করছে এবং বাংলাদেশীদের মানবাধিকার ও মানবিকতা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহন করে, তাহলে দেশের সার্বভৌমত্ব খর্ব হবে।’
রিজভী বলেন, ‘এই সংযোগ স্থাপনের (রেল নেটওয়ার্ক) মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের চাবিকাঠি তাদেরই দেয়া হবে, যারা বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে বৈরী মানসিকতা পোষণ করে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে স্বাধীন দেশের গোয়েন্দা ব্যবস্থাও ভেঙে পড়বে।’
তিনি দেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে রেল যোগাযোগের উদ্যোগ বাস্তবায়ন থেকে সরকারকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, “এ সরকার ‘ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য ভারতের সাথে অনেক গোপন চুক্তি করেছে’ এবং এখন স্বাভাবিকভাবেই এসব চুক্তি সামনে আসছে।”
তিনি বলেন, ‘জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে এ সরকার অবৈধ ক্ষমতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই দেশের অভ্যন্তরে রেললাইন নির্মাণের অনুমতি দিচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘এ সরকার জোর করে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিক্রি করতে শুরু করেছে।’ তিনি বলেন, ‘ভারতকে উদারভাবে সব দেয়ার পরিণতি হবে ভয়াবহ।’
উল্লেখ্য, রোববার (১৬ জুন) ভারতের পত্রিকা ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’য় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে বিদ্যমান রুটের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে রেলপথের একটি বিকল্প নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে যাচ্ছে ভারত। এটি ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত একটি এলাকা, যা উত্তরে নেপাল এবং দক্ষিণে বাংলাদেশ দ্বারা বেষ্টিত।