পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
আজ (১৪ জুন) পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে সারা বিশ্বের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান মিনায় পৌঁছেছেন। এর মাধ্যমে পবিত্র হজ পালনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো। লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদাহ ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মূল্ক’ ধ্বনিতে মুখরিত কাবা চত্বর। প্রথমদিন হজযাত্রীরা (পুরুষ) সেলাই ছাড়া ইহরাম বা সাদা কাপড় পরেন। অপরদিকে নারীরা ঢিলেঢালা পোশাক পরেন।
আরবি বর্ষপঞ্জিকার শেষ মাস জিলহজের ৮ তারিখ থেকে শুরু হয় হজ। এরপর ৯ জিলহজে হয় আরাফাতের দিন। আর ১০ জিলহজে পশু কোরবানি করেন হাজিরা। পশু কোরবানি শেষে আরও দুইদিন থাকে হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা। অর্থাৎ হজ সম্পন্ন করতে সবমিলিয়ে সময় লাগে পাঁচদিন।
সারা বিশ্বের প্রায় ২০ লাখ মানুষ এবার হজে অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে হজে গেছেন ৮২ হাজার ৭৭২ জন। হজের প্রথম দিন পুরুষ হাজীরা সেলাই ছাড়া ইহরাম বা সাদা কাপড় পরেন। অপরদিকে নারী হাজীরা ঢিলেঢালা পোশাক পরেন। এদিন আরও কিছু নিয়ম নীতি মানতে হয়। যেমন কারও সঙ্গে রাগারাগি না করা এবং যৌন সম্পর্কে লিপ্ত না হওয়া।
ইহরাম বাধার পর দলে দলে হাজিরা মিনায় যান। বেশিরভাগ মানুষ বাসে ও গাড়িতে গেলেও কেউ কেউ হেঁটেও মিনায় যান। এটি ৮ কিলোমিটারের একটি পথ। হজের অংশ হিসাবে ৮ জিলহজ মিনায় সারা দিন থাকবেন হাজিরা। ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। সন্ধ্যার পর মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা করবেন। সেখানে রাত যাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন।
১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন। এরপর বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, কুরবানি ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে স্বাভাবিক পোশাকে মক্কায় কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ, সাঈ শেষে মিনায় ফিরে গিয়ে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান এবং প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন।
প্রত্যেক শয়তানকে ৭টি করে পাথর মারতে হয়। মসজিদে খায়েফের দিক থেকে মক্কার দিকে আসার সময় প্রথমে জামারায় সগির বা ছোট শয়তান, এরপর জামারায় ওস্তা বা মেজ শয়তান, এরপর জামারায় আকাবা বা বড় শয়তানকে পাথর মারতে হবে। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ প্রতিবারের মতো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
মিনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে হজযাত্রীরা মক্কায় ফিরে যান এবং শেষবারের মতো কাবা তাওয়াফ করেন। যা ‘বিদায়ী তাওয়াফ’ নামেও পরিচিত।