চাপা পড়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে মারা যায় ২ বছরের শিশুটিও
সিলেটের নগরের মেজরটিলার চামেলীবাগ এলাকায় টিলা ধসে একই পরিবারের সাতজন চাপা পড়েছেন। এর মধ্যে চারজনকে জীবিত উদ্ধার এবং তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১০ জুন) সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর দুপুর ১টার দিকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান (র.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- ওই এলাকার মরহুম রফিক উদ্দিনের ছেলে আগা করিম উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার রুজি (২৫) ও তাদের ছেলে নাফজি তানিম (২)। মরদেহগুলো সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় বাসার পাঁচজনকে অক্ষত ও দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। আহতদের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজে যায়। পরে তাদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে যোগ দেয় সেনাবাহিনীর একটি টিম। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর মাটিচাপা অবস্থায় স্ত্রী-সন্তানসহ করিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার (৮ জুন) থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ হচ্ছিল। এ অবস্থায় টিলার মাটি নরম হয়ে যায়। সোমবার (১০ জুন) ভোরে মেজরটিলা চামেলীবাগের একটি টিলা ধসে পার্শ্ববর্তী বাড়ির ওপর পড়ে। এতে একই পরিবারের ১০ জন মাটি চাপা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা পাঁচজনকে অক্ষত ও দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
খবর পেয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সোমবার সকালে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে তাৎক্ষণিক দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ সময় তিনি ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে সিসিক কর্মীদের উদ্ধারকাজে সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।
গত তিনদিন ধরে সিলেটে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। শনিবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। রোববার ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এতে সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া নগরের উপকণ্ঠে টিলা ধসের শঙ্কা তৈরি হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক বার্তা কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।