সিলেটে বাড়ছে নদীর পানি, বন্যার পূর্বাভাস
সিলেট অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়ছে। বৃষ্টির বদৌলতে অসহনীয় গরম থেকে মুক্তি মিললেও বিভিন্ন এলাকায় শোনা যাচ্ছে বন্যার পদধ্বনি। লাগাতার ভারি বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে দেখা দিয়েছে বন্যার শঙ্কা। ইতোমধ্যে জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে দেখা গেছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সিলেটের দক্ষিণবাগে ১৮০ মিলিমিটার। এ ছাড়া সিলেটের জাফলংয়ে ১০১, জকিগঞ্জে ১০৭, লাটুতে ১০০, সিলেটে ৮২, লালাখাল ৮১, ছাতকে ৭৪, কানাইঘাট ৬৬ এবং সুনামগঞ্জে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মানিকগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে সিলেট ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমেই বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ভারতের মেঘালয় পর্বতের চেরাপুঞ্জি এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১৮২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া আসামের সিলচরে ১৪৬, গোয়ালপাড়া ৯৪, তেজপুরে ৫১, জলপাইগুড়িতে ৪৭ এবং আসামের ধুব্রিতে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর জন্য বন্যা আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিলেটের ওপর দিয়ে বয়ে চলা নদ-নদীর পানি ইতোমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। গত দুইদিনে মেঘালয় পর্বতের চেরাপুঞ্জি এলাকায় ১ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের ধারণা করা হচ্ছে। যার কারণে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক ও সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢল নেমে আসার প্রবল আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে, অন্যদিকে যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে এবং যমুনা নদীর পানি ধীরগতিতে বাড়তে পারে। বর্ণিত সময়ে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি কমে যাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়চ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বর্ধিত ৫ (পাঁচ) দিনে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু চট্টগ্রাম উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।