প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিলের কারণ জানালেন ওবায়দুল কাদের
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের আগে ‘অপকর্মের’ খবর পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার সন্ধায় আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
যাদেরকে বেনজীর আহমেদের মতো সুশীল মনে করি ভালো মনে করি তাদের ব্যাপারে সরকার নিজ উদ্যোগে কোন খোঁজ খবর নেবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির চুক্তি বাতিল হয়েছে। সে বিষয়ে আপনারা সাংবাদিকরা কি রিপোর্ট করেছেন? সেটা এখন পাচ্ছেন।’
তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ আছে কি না আমি জানিনা। নিশ্চয় তাদের কর্তব্যে কোন প্রকার বিচ্যুতি ঘটেছে। সেটা কি রকম আমি তো জানিনা।’
বেনজির ও আজিজ আহমেদের দরকার শেষ সরকারের। তাই তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে, বিএনপি্র এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনার প্রশ্নটা সঠিক হয়নি, তারা বলছে বেনজির, আজিজ আহমেদরা আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। আমি জানতে চাই, আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, কহিনুর এরা কাদের সৃষ্টি। আমি জানতে চাই, দুর্নীতি লুটপাটের বহর হাওয়া ভবন এটা কার সৃষ্টি? এই প্রশ্নের জবাব চাই।’
‘প্রশ্ন করেছে, আমিও পালটা প্রশ্ন করছি, রকিবুল হুদা সাবেক আইজিপি ছিলো, চট্টগ্রামে ২৪ জানুয়ারি আমাদের নেত্রীর সভায় তাকে টার্গেট করে গুলিবর্ষণ করা হয়েছিলো, হামলা করা হয়েছিলো। আশরাফুল হুদার দুর্নীতি সবাই জানেন। আশরাফুল হুদা তারা সৃষ্টি করেছেন, তারা কি বিচার করেছেন? বেনজীর আওয়ামী লীগ আমলে আমাদের আইজিপি ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘এখন তার ব্যাপারটা...এখন এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা তো একটা প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করতে পারি না। ব্যাপারটা যখন প্রকাশ্যে এসেছে তখন দুদক তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে নিশ্চয়ই মামলা করবে। যে যতটা অপরাধ, অপকর্ম করেছে ততটা শাস্তি পেতে হবে।’
‘বিএনপির আমলে তাদের কোন নেতা, সরকারি কোন কর্মকর্তা, পুলিশের সাবেক কোন কর্মকর্তা তাদের কেউ কি.... ইম্পিউনিটি কালচার গড়ে তুলেছিলো তাদের কি কারো বিচার হয়েছিলো? শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে, সে কারণে তিনি আজকে দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। যখনই যেটা প্রকাশ পাচ্ছে... সেই করোনার সময় ফেইক হসপিটাল করে যারা অপকর্ম করেছে তাদের কিন্তু আমাদের নেত্রী ক্ষমা করেননি। আজকেও অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি পেতেই হবে এখানে কোন ছাড় নেই।’
আওয়ামী লীগের কোন দায় আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বেনজিরের কথা বলি, বেনজিরের যে ক্যারিয়ার, তার যে পারসোনালিটি, তাকে তো বাইরে থেকে আপনারা কেউ ভাবেননি এখন যা শোনা যাচ্ছে। এটা তো আপনারা ভাবেননি, কেউই ভাবেনি। আজিজ আহমদ অত্যন্ত বিচক্ষণ অফিসার। খুব পড়াশোনা জানা অফিসার। তার কিছু ডিগ্রি আছে যেটা অন্য সেনা প্রধানদেরও নাকি নেই। এখন আসলে যোগ্যতার জন্যই সেনাপ্রধান করা হয়েছে। এখন সে যদি দুর্নীতি করে, সেটাও তদন্ত হবে। দুর্নীতির তথ্য পেলে তারও তদন্ত হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, আমি এটুকু বলতে পারি।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।