২৪ মে ২০২৪, ১১:১৫

মতিঝিল আইডিয়াল ছাত্রী ধর্ষণ মামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেন খন্দকার মুশতাক

  © সংগৃহীত

রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সাবেক দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ ধর্ষণ মামলা থেকেও রেহাই পাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানটির একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ের ঘটনায় তিনি আলোচিত-সমালোচিত হন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা।

তবে তদন্তে ছাত্রীর পরিণত বয়সে (১৯ বছর) স্বেচ্ছায় বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় মামলার অভিযোগকে ‘তথ্যগত ভুল’ উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিচ্ছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আগামী সপ্তাহে এই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে। 

পিবিআই ঢাকা মহানগরের বিশেষায়িত তদন্ত ও অভিযান (সংঘবদ্ধ অপরাধ-দক্ষিণ) শাখার এসআই শাহীন মিয়া  বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত বছরের ৮ আগস্ট মামলাটি করা হয়। প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করে। তবে বাদী তাদের প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট না হওয়ায় নারাজি দেন। তিনি দাবি করেন, ছাত্রীর একটি গোপন ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে তাকে বিয়েতে বাধ্য করেন মুশতাক। তাছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা বাদীর পক্ষের সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেননি। এর প্রেক্ষাপটে আদালতের নির্দেশে মামলাটির অধিকতর তদন্ত করে পিবিআই।

তদন্ত সূত্র জানায়, বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী, তাঁর মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছে। তিনি মেয়ের অবস্থান জানতে পেরে গুলশান এলাকায় যান। তখন বাড়ির জানালা দিয়ে মেয়ে তাঁকে দেখতে পেয়ে উদ্ধারের অনুরোধ জানান। তবে তদন্তে অপহরণ বা আটকে রাখার সত্যতা পাওয়া যায়নি। ঘটনার বিষয়ে ওই বাড়ির ব্যবস্থাপক, বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি ও নিরাপত্তাকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদেও এমন তথ্য মেলেনি। এমনকি বাদীর মোবাইল ফোনের সিডিআর (কল ডিটেইলস রেকর্ড) পর্যালোচনায় ঘটনার দিন সকাল ১০টা বা সারাদিনে তাঁর অবস্থান গুলশান এলাকায় পাওয়া যায়নি। বরং সেদিন সকাল বেলায় তাঁর বাসা মুগদা, দুপুরে ঢাকা জজকোর্ট, বিকেলে পুরানা পল্টন এবং সন্ধ্যায় আরামবাগ এলাকায় অবস্থান করেছেন। ঘটনাস্থলের নিরাপত্তাকর্মীসহ অন্য কেউ তাঁকে সেদিন বাড়ির আশপাশে দেখতে পাননি। অন্যদিকে, অভিযুক্ত মুশতাক এবং ওই ছাত্রীর মোবাইল ফোনের সিডিআর পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঘটনার তারিখ ও সময়ে দু’জনই নিকেতনের বি-ব্লকের দুই নম্বর সড়কে ছিলেন। 

ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন সনদ ও শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদে ছাত্রীর জন্ম তারিখ ২০০৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ, তিনি প্রাপ্তবয়স্ক। তিনি ভালোবেসে স্বেচ্ছায় মুশতাককে গত বছরের ২৫ মার্চ বিয়ে করেন। তাঁকে কেউ অপহরণ করেননি। বয়সের অসামঞ্জস্যের কারণে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশ হয়। 

এদিকে বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী, মুশতাক তাঁর মেয়েকে অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। তবে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও কর্মীদের প্রকাশ্যে-গোপনে জিজ্ঞাসাবাদে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলেও জানান তদন্ত কর্মকর্তা।