২১ মে ২০২৪, ০৮:০৮

এভারেস্টের পর এবার প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে লোৎসে জয় করলেন বাবর

এভারেস্টের পর এবার প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে লোৎসে জয় করলেন বাবর  © সংগৃহীত

পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের পর বাবর আলীর এবার বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ শৃঙ্গ লোৎসে জয় করেছেন। লোৎসের উচ্চতা ২৭ হাজার ৯৪০ ফুট। এ লোৎসেতে বাবরই প্রথম বাংলাদেশি। এর আগে কোনো বাংলাদেশি ওই শিখরে পৌঁছাতে পারেননি। এ পর্বত শৃঙ্গ জয় করে কোনো বাংলাদেশি পর্বতারোহীর জন্য বাবর আলীর অনন্য এক রেকর্ড। বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের মধ্যে একই যাত্রায় এভারেস্ট ও লোৎসে জয়ী একজনই তিনি বাবর আলী। 

মঙ্গলবার (২১ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল ৬ টা ৫ মিনিটে এ চূড়ায় পৌঁছান তিনি। ডা. বাবর এর আগে গত রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় দীর্ঘ ১১ বছর পর এভারেস্টে সফল ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়েছেন।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন বাবর আলী। পর্বতারোহণের প্রয়োজনীয় অনুমতি ও নানা সরঞ্জাম কেনার কাজ শেষ করে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। সেখানে অবস্থান করেন সপ্তাহখানেক। ট্রেকিং পর্ব শেষ করে পৌঁছান এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে। মূল অভিযান শুরু হয় এখান থেকেই। পর্বতের চূড়ায় উঠতে সময় লাগে প্রায় দুই মাসের মতো।

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বুড়িশ্চর এলাকার লেয়াকত আলী এবং লুৎফুন্নাহার বেগম এর দ্বিতীয় সন্তান বাবর ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৫১ তম ব্যাচের ছাত্র। কিছুদিন জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করলেও আগের অভিযানের সময় ছুটি না মেলায় ত্যাগ করেন চাকরির মোহ। তার এবারের অভিযানে মোট খরচ হচ্ছে ৪৫ লাখ টাকা। এ অভিযানের মূল পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে ভিজ্যুয়াল নিটওয়্যার লিমিটেড।

বাবর ২০১৭ সালে ভারতের উত্তর কাশীতে অবস্থিত ‘নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং’ হতে বেসিক মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স সম্পন্ন করেন। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের অন্যতম শীর্ষ পর্বতারোহণ ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।

বাবর আলী ২০২৩ সালে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে সম্পন্ন করেছেন ভারতের দীর্ঘতম হাইওয়ে কাশ্মীর-কন্যাকুমারি (৪০০০ কিমি) সাইক্লিং। ২০২২ সালে ‘ভোমড়া-তামাবিল’, ২০২১ সালে ‘হালুয়াঘাট-কুয়াকাটা’, ২০১৭ সালে ‘টেকনাফ-তেতুলিয়া’ এবং ‘আখাউড়া-মুজিবনগর’ এই চারটি ক্রস-কান্ট্রি সাইক্লিং সম্পন্ন করেন।

তিনি ২০১৯ সালে একটানা ৬৪ দিন হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশের ৬৪ জেলা এবং প্রচার করেছেন সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বর্জনের বার্তা। এছাড়া তিনি দৌড়েছেন বহু ম্যারাথন ইভেন্টে। ২০২১ সালে সম্পন্ন করেছেন ‘DIWA সার্টিফাইড স্কুবা ডাইভিং’ কোর্স। ২০১৯ সালে করেছেন কাপ্তাই-রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই এবং ২০১৭ সালে কাপ্তাই-বিলাইছড়ি-কাপ্তাই কায়াকিং।

এর আগে, ২০১০ সালের ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের শীর্ষে ওঠেন মুসা ইব্রাহীম। এরপর ২০১১ ও ২০১২ সালে দুবার এভারস্ট জয় করেন এম এ মুহিত। প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২০১২ সালের ১৯ মে এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন নিশাত মজুমদার। একই মাসের ২৬ মে ওয়াসফিয়া নাজরীন জয় করেন এভারেস্ট। ২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্টজয়ী পঞ্চম বাংলাদেশি সজল খালেদ এভারেস্টচূড়া থেকে নেমে আসার সময় মারা যান।