আজ ঘরে ফিরছেন এমভি আবদুল্লাহর নাবিকেরা, পরিবারে ঈদের আনন্দ
সোমালিয়ায় জলদস্যুমুক্ত জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমবার কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে অবশেষে বাড়ি ফিরছেন ২৩ নাবিক। জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়ে আসা ২৩ নাবিকের অন্য স্বজনরাও সাজিয়েছেন নানা পরিকল্পনা। জিম্মি ঘটনার ৬৩ দিন পর আজ বাড়ি ফেরা হবে তাদের। আজ বিকেলে সদরঘাট জেটিতে নাবিকেরা তীরে এলে তাদের বরণ করবেন স্বজনদের অনেকে। নাবিকদের পরিবারে আজ ঈদের আনন্দ।
মঙ্গলবার (১৪ মে) নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরছেন সোমালীয় জলদস্যুদের জিম্মি দশা থেকে মুক্ত এই নাবিকরা। জিম্মি নাবিকদের দেশে ফেরার খবরে নাবিকদের পরিবারেও খুশির জোয়ার। তাদের অপেক্ষায় এতোদিন কাটানো নির্ঘুম রাত, চরম আতঙ্কে কাটানো কষ্টের দিনগুলো ভুলে স্বজনদের মুখে ফুটেছে হাসি।
জানা গেছে, নাবিকদের নিয়ে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজটি কুতুবদিয়া বহির্নোঙরে ভিড়েছে গতকাল বিকালে। সেখানে চলছে চুনাপাথর খালাস কার্যক্রম। তবে, আজ সকালে কুতুবদিয়া থেকে ২৩ নাবিককে নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে ‘এমভি জাহান মনি-৩’ নামে একই কোম্পানির আরেকটি জাহাজ। দুপুরের পর যেকোনো সময় চট্টগ্রাম বন্দর এনসিটিতে পৌঁছাবেন নাবিকরা। সেখানে তাদের বরণ করে নেবে পরিবার ও স্বজনরা।
কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করিম বলেন, ‘গত ২৮ এপ্রিল দুবাই থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা জাহাজটি সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় কুতুবদিয়া চ্যানেলে নোঙর করেছে। মঙ্গলবার বিকেলে জাহাজে থাকা নাবিকদের সদরঘাটের জেটিতে নামাবো আমরা। সেখান থেকে তারা যার যার বাড়িতে ফিরে যাবে। স্বজনদের কেউ যদি সদরঘাটে আসতে চায় আমরা বারণ করবো না। তবে বেশি মানুষ সেখানে ভিড় না করাটাই ভালো হবে।’
উদ্ধার হওয়া ২৩ জন নাবিক হচ্ছেন, জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার মো. আতিক উল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট মো. সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এএসএম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ, এবি পদের মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসাইন, জয় মাহমুদ, ওএস পদের মো. নাজমুল হক, অয়েলার পদের আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, ফায়ারম্যান মোশাররফ হোসেন শাকিল, চিফ কুক মো. শফিকুল ইসলাম, জিএস পদের মোহাম্মদ নুর উদ্দিন ও ফিটার মোহাম্মদ সালেহ আহমদ।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এই জাহাজ ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার দস্যুরা। মুক্তিপণ দিয়ে ৩৩ দিনের মাথায় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়। এরপর জাহাজটি প্রথমে আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। এ হিসাবে আমিরাত থেকে ১৩ দিনের মাথায় জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছাল।