একাদশে খালি থাকবে ৮ লাখ আসন, মূল ভর্তিযুদ্ধ কতটি প্রতিষ্ঠানে
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। এক লাখ ৮২ হাজার ১৩২ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। ৯টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে গড় পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ। পাস করা এসব শিক্ষার্থীর ভর্তির জন্য দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে প্রায় ২৫ লাখ।
সংশ্লিষ্টদের তথ্য বলছে, এসএসসিতে পাস করা সবাই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও আট লাখ ২৭ হাজারের বেশি আসন ফাঁকা থাকবে। তবে এসব শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করা শিক্ষার্থীদের ভালো কলেজগুলোয় ভর্তির প্রতিযোগিতা হবে। ফলে ভর্তির ক্ষেত্রে মূল প্রতিযোগিতা থাকবে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো কেন্দ্র করে।
এর আগে প্রকাশিত বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্যও বলছে, সারাদেশে একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২৫ লাখ। এর মধ্যে রাজধানীতেই রয়েছে ৫ লাখের বেশি আসন। এবার মাধ্যমিকে ১১টি বোর্ড মিলে পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। সে হিসাবেও অন্তত আট লাখের বেশি আসন খালি থেকে যাবে।
সারাদেশে একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২৫ লাখ। এর মধ্যে রাজধানীতেই রয়েছে ৫ লাখের বেশি আসন। এবার মাধ্যমিকে ১১টি বোর্ড মিলে পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। সে হিসাবেও অন্তত আট লাখের বেশি আসন খালি থেকে যাবে।
জানা গেছে, চলতি বছর একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে আবেদন শুরু হতে পারে মে মাসের শেষের দিকে। এ প্রক্রিয়া চলবে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত। তবে এ সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত করেনি আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। দু’একদিনের মধ্যেই এ বিষয়ে নীতিমালা পেলে বোর্ডের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড সভাপতি এবং ঢাকাা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।
সোমবার (১৩ মে) সকালে অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এবার ২৫ লাখ আসন থাকলেও পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার। সে হিসেবে ৮ লাখের বেশি আসন খালি থাকবে। তবে ভালো কলেজগুলোয় ভর্তির প্রতিযোগিতা হবে। ভর্তির বিষয়ে দু’একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে মানসম্পন্ন ও ভালো কলেজ হিসেবে বিবেচিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দু’শতাধিক। এতে আসন আছে এক লাখের কাছাকাছি। এসব কলেজেই শিক্ষার্থীদের ভর্তির আগ্রহ বেশি থাকবে। তবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ থাকে রাজধানীর দিকে। ঢাকায় মানসম্পন্ন কলেজের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০টি। এগুলো ভর্তিতে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়।
যদিও এসব কলেজের যাদের স্কুল সংযুক্ত রয়েছে, তারা তাদের নিজস্ব শিক্ষার্থী আগে ভর্তি নেবে। এরপর বাকি আসনে বাইরের শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। ফলে রাজধানীর ভালো কলেজে ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ নেই। অথচ জিপিএ-৫ পাওয়া এক লাখ ৮২ হাজার শিক্ষার্থীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতেই থাকবে রাজধানীর নামীদামি কলেজ।
এবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৯ হাজার ১৯০ জন। বোর্ডের অধীন এবার পরীক্ষার্থী ছিল, চার লাখ সাত হাজার ৯৬১ জন। এর মধ্যে তিন লাখ ৪২ হাজার ৩৭৯ জন পাস করেছে। তারাও সবাই ঢাকার কলেজে ভর্তি হবেন।
আরো পড়ুন: ৬০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৯৮ জনেরই জিপিএ-৫, পাস শতভাগ
জানা গেছে, ঢাকার শীর্ষ কলেজগুলোর মধ্যে নটর ডেম কলেজে আসন আছে তিন হাজার ২৭০টি। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে দু’হাজার ৩৭৬ ও হলি ক্রস কলেজে এক হাজার ৩৩০টি আসন রয়েছে। এ ছাড়া রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে এক হাজার ৭০৪, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে দু’হাজার ২০০, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে এক হাজার ১৪, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এক হাজার ১৬৫ ও বিএএফ শাহীন কলেজে এক হাজার ২২০টি আসন আছে।
পাাশাপাশি ঢাকা কলেজে এক হাজার ২০০, বাংলাদেশ নেভি কলেজে ৯৫০, ঢাকা সিটি কলেজে তিন হাজার ৭৬২, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ পাবলিক কলেজে এক হাজার ৯৮০, শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১ হাজার ১২০, ঢাকা কমার্স কলেজে চার হাজার ৭০০ ও শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজে ৮৮০টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এর বাইরে বেশ কয়েকটি মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির তীব্র প্রতিযোগিতা হয়।