সাভারে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়
সারাদেশে চলমান তীব্র গরমে বিপর্যস্ত হয়ে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায় ও মোনাজাত করেছেন এলাকার যুবক, বৃদ্ধ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে শতাধিক মুসল্লি অংশ নেয়। নামাজের ইমামতি করেন মুফতি মাওলানা শামীম আহমাদ। নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য মোনাজাত করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৭টার দিকে ঢাকার উপকন্ঠে সাভারের পাথালিয়া ইউনিয়নে স্থানীয় দারুল ইসলাম ফাজিল মাদ্রাসা ময়দানে সালাতুল ইস্তিসকার নামাজের আয়োজন করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় যুবসমাজ।
নামাজের পূর্বে স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে নসীহামূলক বক্তব্য প্রদান করেন মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আমির হোসেন ও বর্তমান উপাধ্যক্ষ মাওলানা নুরুল হক। তিনি বলেন, ‘সবাই আল্লাহ তা'আলার কাছে নিজেদের গুনাহর জন্য ক্ষমা চাইবো এবং গেল কয়েকদিনে প্রচণ্ড দাবদাহে মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’ এসব পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির প্রার্থনা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এ বিপদ থেকে পরিত্রাণ পেতে মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতে হবে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর যুগে যখন প্রচণ্ড খরা হতো তখন সবাইকে নিয়ে তিনি খোলা মাঠে গিয়ে মহান আল্লাহর দরবারে গুনাহ মাফের প্রার্থনার পাশাপাশি বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতেন। এটা একটা সুন্নাহ। সেই সুন্নাহ পালনে সালাতুল ইস্তিসকার আয়োজন করা হয়।
আয়োজকেরা জানান, বাংলা বৈশাখ মাসের মৌসুমে কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার কথা কিন্তু আকাশে বৃষ্টির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উল্টো টানা তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাঠে রোদে পুড়ে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ রোদে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনার আয়োজন করেছেন। নামাজে সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য ফেসবুকে প্রচারণা চালানো হয়েছিল।
ছেলেকে নিয়ে নামাজ আদায় করতে এসেছিলেন উপজেলার গকুলনগর গ্রামের মাহাবুর হোসেন। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই তিনি এ নামাজের বিষয়ে অবগত আছেন। বর্তমান রোদ-গরমে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা একধরনের বড় দুর্যোগ। তাই দুর্যোগ থেকে মুক্তি পেতে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি নামাজ আদায় করতে এসেছেন।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় চৌয়ারী পাড়া মসজিদের খতিব মাওলানা আজিজুল ইসলাম ফোরকানী বলেন, তীব্র খরা আর প্রচণ্ড গরমে নাকাল মানুষ। ঘরে-বাইরে কোথাও এক চিলতে স্বস্তি মিলছে না। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে নিম্ন আয়ের দিনমজুর ও রিকশাচালকসহ খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়ছেন বিপাকে। এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে ধর্মীয় নীতি অনুযায়ী দুই রাকাত নামাজ আদায় করে মহান আল্লাহর দরবারে গুনাহ মাফের প্রার্থনার পাশাপাশি বৃষ্টি ও পানির জন্য দোয়া করা হয়।
জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর বিকল্প নেই উল্লেখ করে স্থানীয় পূর্ব-পানধোয়া জামে মসজিদের ইমাম মাও. আবু বকর মোহাম্মদ তাহের বলেন, হাঁসফাঁস গরমে নাজেহাল অবস্থা, জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। আমরা প্রতিনিয়ত যেভাবে গাছপালা, বন-বাদার কেটে উজাড় করছি এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সামনের ভবিষ্যৎ আলোহীন। গাছ পরম বন্ধু, যা আমাদের অক্সিজেন দেয়। পরিবেশ থেকে গাছ কাটার ফলে জলবায়ুর উপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তা খুব সহজেই অনুমেয়। পরিবেশ বাঁচাতে হলে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই।