০৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:১৭

ফ্যানে ঝুলছিল দুই শিশুকন্যাসহ গৃহবধূর লাশ

প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

দুই শিশুকন্যাসহ মায়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূর নাম  ফাতেমা আক্তার সীমার (২৬), দুই শিশুকন্যা আরিফ (৪ বছর) ও আরিয়া (২ বছর)।

স্বামী পরকীয়ায় আসক্ত সন্দেহে দুই মেয়েসহ ফাতেমা আক্তার সীমা নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামে এ ঘটনায় তিন জনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আত্মহত্যাকারী ফাতেমা আক্তার সীমা (২৬) পুটিয়া গ্রামের সদ্য প্রবাস ফেরত আরিফ হোসেন রাঢ়ীর স্ত্রী। মৃত দুই শিশুকন্যা হলো আরিফা (৪) ও আরিয়া (২)।

জানা গেছে, ৭ বছর আগে হাইমচর উপজেলার চরকৃষ্ণপুর গ্রামের মোস্তফা কোতোয়ালের মেয়ে ফাতেমা আক্তার সীমার সঙ্গে ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের পুটিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম রাঢ়ীর ছেলে আরিফ হোসেন রাঢ়ীর বিয়ে হয়। প্রবাসী আরিফ হোসেন রাঢ়ী গত ফেব্রুয়ারি মাসে দুবাই থেকে দেশে আসে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দুই দিন পর প্রবাসে ফিরে যাওয়ার কথা।

স্বামী আরিফ হোসেন রাঢ়ী জানায়, মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তার স্ত্রী ফতেমা আক্তার সীমা তার দুই সন্তানকে খাওয়াচ্ছে। কিন্তু প্রায় দুই ঘণ্টা পর চালের বস্তা নিয়ে বাড়ি ফিরে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। পরে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের পিছন দিক দিয়ে জানালা গিয়ে দেখতে পাই স্ত্রী ও দুই সন্তান ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে রয়েছে। পরে চিৎকার দিলে মাসহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ঘরের দরজা ভাঙ্গলে আমি নিজেই তিনজনের ঝুলন্ত লাশ রশি কেটে খাটের মধ্যে শুইয়ে দেই।

তবে প্রতিবেশীদের ধারনা মা ও দুই মেয়ের এ মৃত্যু রহস্যজনক। পরকীয়া সন্দেহে মা দুই মেয়ের মৃত্যু নিশ্চিতের পর নিজে আত্মহত্যা করেছে, না স্বামী আরিফ হোসেন রাঢ়ী নিজেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনার রহস্য বের করা উচিত।

ফাতেমা আক্তার সীমার মা শাহিনুর বেগম জানান,  মেয়ে ও দুই নাতনির মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ছটে এসেছি। সোমবার রাতেও মেয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছি। তদন্তের মাধ্যমেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলে বিশ্বাস করি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান জানান, মঙ্গলবার সকালে আরিফ রাঢ়ীর ঘরের বিছানায় মা ও দুই মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি। এ ছাড়া ঘরের ফ্যানের সঙ্গে একাধিক দড়ি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। ঘটনা কি এবং কেন ঘটেছে তা তদন্ত সাপেক্ষে রহস্য বের হবে। এছাড়া আত্মহত্যাকারী ফাতেমা আক্তার সীমার বড় বোনও প্রবাসে ইতোপূর্বে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। ওই পরিবারের এই ধরনের মানসিক সমস্যা রয়েছে কিনা তাও তদন্ত করা প্রয়োজন।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. সাইদুল ইসলাম জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর পাঠানো হয়েছে।