২৫ মার্চ ২০২৪, ১০:২২

৪ দিনের সফরে আজ ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা

ভুটানের রাজা  © সংগৃহীত

চার দিনের সফরে আজ সোমবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। সফরকালে তিনি বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি। আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন। 

এ ছাড়া তিনি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ সফরে থিম্পুর সঙ্গে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই করবে বাংলাদেশ। এ ছাড়া দুই দেশের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা-সংক্রান্ত একটি চুক্তি নবায়ন করা হবে।

সমঝোতাগুলো হচ্ছে– থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) প্রতিষ্ঠা করতে কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ ছাড়া ভারতের ওপর দিয়ে ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়েও আলোচনা চলছে। ভুটানের রাজার সফরে তিনটি নতুন এমওইউ সই হতে পারে। এগুলো ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন ও সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য এসইজেড প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ে।

সকালে বিমানবন্দরে ভুটানের রাজাকে স্বাগত জানাবেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় বিমানবন্দরে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। প্রথম দিন রাজা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন এবং জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। এ সময়ে দুই দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হবে। সফরের প্রথম দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ রাজার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

২৬ মার্চ ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন রাজা। এদিন রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন তিনি। এর পর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজার বৈঠকের কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সফরকালে ২৭ মার্চ ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু পরিদর্শন করবেন। একই দিনে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবেন তিনি।

২৮ মার্চ কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পরিদর্শনের জন্য বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি। পরে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। বাংলাদেশ ছাড়ার আগে সোনাহাট স্থলবন্দরে ভুটানের রাজাকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গার্ড অব অনার দেবে। সেখানে তাঁকে বিদায় জানাবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভুটানের রাজার সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা, আইসিটি ও পর্যটন ক্ষেত্রে নিবিড়তর সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো থাকবে। এ ছাড়া কানেক্টিভিটিবিষয়ক বিভিন্ন আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক উদ্যোগে সমন্বিত সহযোগিতা, কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ট্রানজিট চুক্তি এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি, ভারতকে নিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিনিময়ের ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে ভুটান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠনের পর কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের একটি প্রথম ঢাকা সফর। ভুটানের রাজার সঙ্গে রানি, পররাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী ঢাকায় আসবেন।