শিক্ষার্থীদের খেলার সময় উচ্চ শব্দ হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের কাণ্ড
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় ঝাড়ু দিয়ে পঞ্চম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থীকে বেদম মারধর করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক আল মামুনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের ১৭ নম্বর উত্তর বারাকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয়ের মাঠে উচ্চশব্দে খেলা করায় কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীদের অমানবিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা।
নির্যাতনের শিকার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া বলেন, রোজা ছিলাম বলে টিফিনের সময় বিদ্যালয়ের মাঠে খেলা করছিলাম। খেলা শেষ করে ক্লাসে ঢুকতেই দেখি, হেড স্যার ঝাড়ু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এক-এক করে সব শিক্ষার্থীকে ঝাড়ু দিয়ে পিটাচ্ছেন। আমাকে পেটাতে গেলে ঠেকানোর চেষ্টা করলে ঝাড়ু আমার চোখের কোনায় লাগে। তাছাড়া আমার পিঠেও কয়েকটি আঘাত লাগে।
ছুটির পর বাড়ি ফিরে বিষয়টি মাকে জানালে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরে অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার (২০ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষক আল মামুনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন ও তার শাস্তি দাবি করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গাজী পাভেল হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
অভিভাবকরা বলেন, একজন সুস্থ মানুষ বাচ্চাদের এভাবে পেটাতে পারেন না। আমরা প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি করছি।
এক শিক্ষার্থীর বাবা মুজিবর রহমান বলেন, শিক্ষকরা অবশ্যই শাসন করতে পারেন, কিন্তু তার মানে এই নয় যে ঝাড়ু দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এভাবে পেটাতে হবে। তার শাস্তি হওয়া দরকার।
দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খান মাসুম বিল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ আমার কাছে কোন অভিযোগ করেননি। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছি। ঘটনা সত্য হলে তদন্ত করে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আল মামুন বলেন, ‘মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের চেঁচামেচির কারণে জোহরের নামাজে বিঘ্ন ঘটছিল। একাধিকবার এ অবস্থার সৃষ্টি হলে ক্লাসে গিয়ে তাদের চিৎকার করতে বারণ করা হয়। কোনও ধরনের মারপিট করা হয়নি। আর বুধবার কিছু অভিভাবক আলোচনা করতে এসেছিলেন। কোনও ধরনের অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেনি।’