স্বামীর মৃত্যু শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই জলদস্যুদের কবলে ছেলে আইয়ুব
জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহতে থাকা ২৩ নাবিকের মধ্যে আছেন ইঞ্জিনিয়ার ক্যাডেট আইয়ুব খান। তার জিম্মি হওয়ার খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা হুমায়রা বেগম। তিনি এক মাস আগেই স্বামী আজহার মিয়াকে হারিয়েছেন। স্বামীকে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতে এখন পেয়েছেন ছেলের জিম্মি হওয়ার খবর।
আইয়ুব খানের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরের রাখালিয়া গ্রামে। তিনি বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, চট্টগ্রামের শেষ বর্ষের ইঞ্জিনিয়ার প্রকৌশলীর শিক্ষার্থী।
প্রায় এক মাস আগে তার বাবা আজহার মিয়া মারা যান। সেই শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারটি। এর মধ্যেই ঘরের ছোট ছেলে সাগরে জলদস্যুদের কবলে। এই শোকে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন আইয়ুবের মা হোমায়রা বেগম। কিছুক্ষণ পর পর ছেলের জন্য আর্তনাদ করছেন।
আইয়ুবের মা হোমায়রা জানান, সোমবার বিকেলে আইয়ুব তার সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছে। মঙ্গলবার অন্য ছেলেদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। কেউ তাকে কিছু জানায়নি। গত রাতে তিনি নাতিনের কাছ থেকে শুনে মেঝো ছেলেকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানতে চান। মেঝ ছেলে তাকে জানিয়েছে, আইয়ুবের জন্য চিন্তা না করতে। ভারত মহাসাগরে আইয়ুবদের জাহাজ জলদস্যুরা জিম্মি করেছে। এসব শোনার পর থেকে কান্নাই তার (হোমায়রা) সম্বল।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আমার বাবারে চাই। আমি আর কি চাইতাম। আমি দুদিন ধরে কোরআন শরীফ জান-প্রাণ দিয়ে পড়ছি। আইয়ুবও পরশু ধরে কোরআন শরীফ পড়া শুরু করেছিল। আল্লাহ আপনি রহমত নাজিল করে দেন। আমার স্বামী মারা যাওয়ার ২০-২৫ দিন আগে সবশেষ আইয়ুব বাড়িতে এসেছিলেন। একদিন থেকেই চলে গেছেন।’
আইয়ুবের বন্ধু আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘আমরা আইয়ুবকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেতে চাই। দ্রুত যেন আমাদের মাঝে ফিরে আসে।’
আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গতকাল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ায় জাহাজটিকে জিম্মি করে জলদস্যুরা। জিম্মি করা হয় জাহাজের ২৩ জনকে। জিম্মিদের মধ্যে চট্টগ্রামের ১১ জন ও নোয়াখালীর দুজন রয়েছেন। এ ছাড়া জাহাজটিতে নাটোর, নওগাঁ, ফরিদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, নেত্রকোনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও খুলনার নাবিক রয়েছেন।