এমভি আব্দুল্লাহ নয়, এমভি রুয়েন উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে এমভি রুয়েন নামে একটি জাহাজ দখলে নিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। এসময় ওই জাহাজে থাকা ১৭ জন ক্রু সদস্যকেও উদ্ধার করেছে তারা। এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির নৌবাহিনীর এক মুখপাত্র। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে ভারতীয় বাহিনী এমভি রুয়েন উদ্ধার করলেও বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এমভি আব্দুল্লাহ উদ্ধারের খবর। গতকাল শনিবার দুপুর থেকে বেশ জোরেসোরে ভারতীয় বাহিনী এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ উদ্ধার করেছে বলে ছড়িয়ে পড়ে।
ওমর ফারুক নামে এক বাংলাদেশি ব্যবহারকারী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজকে সোমালিয়ার জলদস্যুদের থেকে উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। এমন খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।’’
বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের অনেককে আবার এর বিপক্ষেও অবস্থান নিতে দেখা গেছে। একটি ট্রাভেল এজেন্সির সিইও বিল্লাহ মামুন নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘ভারতীয় নৌবাহিনী এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ উদ্ধার করেনি। রুয়েন নামে অন্য একটা জাহাজ উদ্ধার করেছে।’’
গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ) এক এক্স বার্তায় ভারতীয় নৌবাহিনী দেশটির উপকূল থেকে ওই জাহাজটি উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছে। এমভি রুয়েন নামের বাল্ক ক্যারিয়ারের এই জাহাজ মাল্টার পতাকাবাহী। গত ডিসেম্বরে এটি ছিনতাই হয়।
এমভি রুয়েন জাহাজ উদ্ধার নিয়ে ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, গত শুক্রবার প্রথম তারা এমভি রুয়েনকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে জলদস্যুদের সবাইকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। একপর্যায়ে জাহাজটিতে থাকা ৩৫ জলদস্যুর সবাই তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
জাহাজটিতে কোনো ধরনের অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ বা মাদক রয়েছে কিনা তা তল্লাশি করে দেখা হয়েছে। এই অভিযানে ভারতীয় নৌবাহিনীর বিশেষ কমান্ডোরাও অংশ নেন বলে বাহিনীর পক্ষে একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এই জাহাজ থেকেই জলদস্যুরা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে নিজেদের দখলে নিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে সোমালিয়ার উপকূলে বাংলাদেশের পতাকাবাহী যে কার্গো জাহাজ ছিনতাই করা হয়েছে, তার জন্য এ জাহাজটিকে জলদস্যুরা ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে থাকতে পারে।
এর আগে, গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের এস আর শিপিংয়ের ১৩ মিটার গভীরতার জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) বেলা দেড়টায় মোজাম্বিক থেকে ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ।
সর্বশেষ ২৩ নাবিকসহ জিম্মি জাহাজটি সোমালিয়ার গারাকাড উপকূলে নোঙর করা ছিল। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুক্রবার (১৫ মার্চ) জাহাজটিকে আরও প্রায় ৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তরে গদবজিরান উপকূল থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা হয়।