চাঁদপুর ও শরীয়তপুরের ৮০ গ্রামে রোজা শুরু সোমবার
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে সোমবার (১১ মার্চ) থেকে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ সাদ্রা দরবার শরিফসহ জেলার প্রায় অর্ধশত গ্রামে রোজা শুরু হবে। এদিকে, শরীয়তপুরের প্রায় ৩০টি গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এদিন থেকে রোজা রাখবেন।
রবিবার (১০ মার্চ) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে সৌদিতে আনুষ্ঠানিকভাবে চাঁদের খোঁজ শুরু হয়। পরে রাতে চাঁদ দেখার খবরটি নিশ্চিত হওয়া যায়।
হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপুর, বাসারা; ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর; মতলব উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা সোমবার রোজা পালন শুরু করবেন।
সাদ্রা দরবার শরিফের পিরজাদা ড. বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী জানান, আগাম রোজা ও দুই ঈদ পালনের প্রবর্তক মাওলানা ইসহাক (রহ.)। ১৯৩২ সাল থেকে সাদ্রা দরবার শরিফের পির সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের নিয়ম চালু করেন।
তিনি আরও বলেন, সৌদি আরবে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার খবর পেয়েছি। আমরা নিজেরাও খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হয়েছি। ইনশাআল্লাহ সোমবার থেকে আমাদের গ্রামে রোজা শুরু হবে।
এদিকে, শরীয়তপুরের প্রায় ৩০টি গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা একদিন আগেই পবিত্র রোজা পালন করবে বলে জানিয়েছে সুরেশ্বর দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ। রবিবার রাতে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর দরবার শরীফে পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে তারাবির নামাজের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা জুলহাস উদ্দিন ও সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা আব্দুল কাদির।
জানা যায়, সারাদেশে সুরেশ্বর পাক দরবার শরীফের কয়েক লাখ ভক্ত ও অনুরাগী ১৯২৮ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করেন। এর মধ্যে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর, কেদারপুর, চাকধ্, চন্ডিপুরসহ ৩০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র রোজা পালন করেন। রোজা রাখার উদ্দেশ্যে মুসল্লিরা রোববার রাতে তারাবির নামাজ পড়ে ভোর রাতে সেহরি খাবেন। সোমবার থেকে তারা রোজা পালন শুরু করে আবার একদিন আগেই পবিত্র ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবেন।
সুরেশ্বর দরবার শরীফের ভক্ত আব্দুল জলিল। তিনিও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখবেন বলে সুরেশ্বর দরবারে এসেছেন তারাবির নামাজ আদায় করতে। তিনি বলেন, আমার বাবাও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখতেন। আমরা বংশ পরম্পরায় এভাবেই ধর্ম পালন করি। ইনশাআল্লাহ আমি সোমবার রোজা রাখব।
সুরেশ্বর দরবার শরীফের গদীনশীন পীর শাহ মুজাদ্দেদী সৈয়দ তৌহিদুল হোসাইন শাহিন নূরী বলেন, পবিত্র রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সুরেশ্বর দরবার শরীফের দুইটি মসজিদে প্রায় ১০০ বছর ধরে তারাবির নামাজ আদায় করা হয়। পৃথিবীতে চাঁদ একটাই। সুতরাং পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলেই আমরা তারাবি, রোজা ও ঈদ পালন করি। এ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় জামাত মিলে প্রায় ১ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে এসেছেন। সুরেশ্বরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় ৩০টি গ্রামের ২০ হাজার মুসল্লি সোমবার পবিত্র রোজা পালন করবেন। সবাইকে পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা জানান তিনি।