২৩ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি এস আলম সুগার মিলের আগুন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪, ০৩:২১ PM , আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৪, ০৩:২৫ PM
চট্টগ্রামের কর্ণফুলিতে এস আলম সুগার মিলে আগুন ২৩ ঘণ্টাতেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অপরিশোধিত চিনিতে থাকা কার্বন ও অক্সিজেনের কারণে চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের গুদামের আগুন পুরোপুরি নেভাতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে এস আলম সুগার রিফাইনারি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিশোধনাগারের ১ নম্বর গুদামে আগুন লাগে। গভীর রাত পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পরে যোগ দেয় নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনীর দল। মঙ্গলবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট আগুন নিভানোর কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ হারুন পাশা জানান, সুগার মিলটিতে সব অপরিশোধিত চিনি ছিল। অপরিশোধিত চিনি মূলত কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের একটি যৌগ। কার্বন ও অক্সিজেন দুটোই আগুন জ্বলতে সহায়তা করে। এখন এই আগুন নেভাতে পানি দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন ১০টি ইউনিট কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, অত্যাধুনিক যন্ত্র লুফ-৬০ দিয়ে রিমোটের সাহায্যে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে সহযোগিতা করছেন ফায়ারের ১২-১৫ সদস্য। প্রতি মিনিটে ১ হাজার লিটার স্পিডে ওই যন্ত্রের সাহায্যে পানি ছেটানো হচ্ছে। এটির সক্ষমতা প্রতি মিনিটে ৩ হাজার লিটার।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল মালেক বলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। পরে যোগ দেয় নৌবাহিনীর একটি দলও। রাত ৯টার দিকে যুক্ত হয় সেনাবাহিনীর একটি দলও। তাদের সঙ্গে অত্যাধুনিক যন্ত্র লুফ ৬০ দিয়ে রিমোটের সাহায্যে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এস আলম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত কুমার ভৌমিক বলেন, মিল চালু থাকা অবস্থায় আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নির্বাপণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, গোডাউনে থাকা ব্রাজিল থেকে আমদানি করা এক লাখ টন অপরিশোধিত চিনি ছিল। এগুলো রমজানকে সামনে রেখে আমদানি করা হয়েছিল। এখান রিফাইন্ড করে চিনিগুলো মার্কেটে যাওয়ার কথা ছিল।
এস আলম গ্রুপের প্রধান ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা মো. মোস্তাইন বিল্লাহ আদিল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখন আগুন নেভানোর চেষ্টা করছি, যাতে চিনি কল ও অন্য গুদামগুলোতে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে।
এদিকে, আগুন লাগার ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা।
এস আলম সুপার রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান কর্ণফুলি নদীর পাড়ের ইছানগর এলাকায়। সোমবার বিকেল ৪টার দিকে কারখানার একটি গুদামে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার সময় কারখানাটি চালু ছিল। সেখানে প্রায় সাড়ে ৫০০ শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। আগুন লাগার পর কারখানাটি বন্ধ করে দেয়া হয়।