ইংরেজিতে ভালো মানেই চাকরি নিশ্চিত, প্রাধান্য কম বাংলার
‘কেউ ইংরেজিতে ভালো, তার মানেই তার চাকরিটি অনিবার্য। অথচ বাংলা ভালো লিখতে কিংবা বলতে পারলেও তার চাকরি হচ্ছে না। বাংলা দেশে জীবিকার ভাষা হতে পারেনি।’ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ‘আমার ভাষা আমার শক্তি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনেরা এসব কথা বলেছেন। ভাষার মাসে সম্প্রীতির বাংলাদেশের উদ্যোগে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি সংগঠনটির আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় সঞ্চালনা করেন। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়নের অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠক। এতে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট কবি ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বাংলা ভাষার ব্যাপারে আরও সজাগ হওয়ার আহ্বান জানান রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. বিশ্বজিত ঘোষ। তার মতে, বিশ্ব পুঁজিবাদ তৃতীয় বিশ্বের ভাষাকে মেনে নিতে চায় না। আমাদের সুবিধা যে, নিজের টাকায় আমরা পদ্মাসেতু করছি। এ কারণে দেশের মান বেড়েছে বিদেশে। অর্থনীতি শক্তিশালী হলে ভাষার মান এমনিতেই বেড়ে যায়।
বাংলা ব্যবহারে অনীহার নানা ইস্যু ও কারণ তুলে ধরে প্রত্থিতযশা এই শিক্ষাবিদ বলেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা শিখেছিল। এমনকি তারা বাংলায় অনুবাদও করেছিল। তার মানে ইংরেজরা বাংলাকে গুরুত্ব দিয়েছিল অনেক বছর আগেই। অথচ এখন তার উল্টোটা ঘটছে।
পিএসসির ভূমিকা ও বিসিএসের নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরে ডক্টর ঘোষ আরও বলেন, মেয়েটি ইংরেজিতে ভালো হলেই কেবল তাকে ভাইভা বোর্ডে গণ্য করা হয়। কিন্তু বাংলা পারল কী পারল না, তা ঠাহর করতে পারছে না কেউ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, এখনো কিছু লোক ইংরেজিতে দাওয়াত কার্ড করে। তারা আসলে অন্যদের থেকে নিজেদের আলাদা করেতে চায়। মূলত এটি তাদের মানসিক রুগ্ণতার লক্ষণ। বিভিন্ন সাইনবোর্ডে ইংরেজি লেখার আধিক্য এখনো রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলা অক্ষরগুলো খুবই ছোট আকারে লেখা থাকে। এটি অবশ্যই দুঃখজনক। কলকাতায় এই অবস্থা আরো ভয়াবহ। এই সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুত সব বই বাংলায় অনুবাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে একটি নীতিমালা তৈরি করতে হবে যেন বাংলার ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।
এ ছাড়াও আলোচক হিসেবে ছিলেন শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ড. রতন সিদ্দিকি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. বিশ্বজিত চন্দ, মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া আহমেদ, সাবেক সচিব নববিক্রম কিশোর ক্রিপুরা, ড. হামিদা আক্তার, অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকারসহ বিশিষ্টজনরা।