সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে আয়ানের পর এবার আইডিয়াল ছাত্রের মৃত্যু
রাজধানীর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর রেশ না কাটতেই রাজধানীতে আবারও ঘটলো সুন্নতে খৎনা করতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে এই শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে ২ জন চিকিৎসককে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত শিশু আহনাফ তাহমিন আয়হাম (১০) মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এদিন রাত ৮টায় আয়হামকে সুন্নতে খৎনা করাতে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
স্বজনদের অভিযোগ, লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও তারা ফুল অ্যানেস্থেসিয়া দিয়েছে। আর এ কারণেই আয়হামের মৃত্যু হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, অপারেশন শেষে শিশুটি বমি করলে তা ফুসফুসে চলে যায়। পরে যা আর নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।
জন্মের সময় আয়হামের পুরো পরিবার ফিনল্যান্ডের বাসিন্দা ছিলেন। তবে অনেকদিন ধরেই থাকছেন দেশে। সুন্নতে খৎনাকে তেমন জটিল অপারেশন মনে করেননি তারা। তাই বাসার কাছের জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসা হয় আয়হামকে। হাস্যোজ্জ্বল সন্তানের মরদেহ দেখার শোক কোনোভাবেই মানতে পারছে না আয়হামের মা খাইরুন নাহার ও তার স্বজনরা।
জানা গেছে, বাবা ফখরুল আলম ও মা খায়কুন নাহার চুমকি মঙ্গলবার রাতে সন্তানকে সুন্নতে খৎনা করাতে নিয়ে আসেন মালিবাগের হাসপাতালটিতে। অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জন ডা. এস এম মুক্তাদিরের তত্ত্বাবধানে রাত আটটার দিকে খৎনা করানোর জন্য অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পর আর ঘুম ভাঙেনি আহনাফের। এর ঘণ্টাখানেক পর হাসপাতালটির পক্ষ থেকে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে হাসপাতালটির পরিচালক এস এম মোক্তাদির বলেন, খৎনা লোকাল এনেস্থেশিয়া দেয়া হয়েছিল। বয়স দশ বছরের বেশির পাশাপাশি ওজন একটু বেশি হওয়ায় তার অ্যাংজাইটি রিলিফের জন্য অ্যানেস্থাইটিসের পরামর্শে ‘হাফ এম্পল সেডিল’ দেয়া হয়েছিল। একপর্যায়ে বমি শুরু হয় আয়হামের এবং বমি ফুসফুসে চলে গেলে তাকে বাঁচানোর জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
হাতিরঝিল থানা সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে হাসপাতালের দুইজন ডাক্তারকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।