নেত্রকোনায় এক উপজেলার ৬৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা,কারিগরি এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলিয়ে ২৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ১৮২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২২টি, ৬টি কলেজের মধ্যে ৩টি, ৩৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬টি ,১৭টি মাদ্রাসার মধ্যে ১৬টি এবং ৮টি কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজের মধ্যে ৭ টিতে নেই শহীদ মিনার। এই সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কাছাকাছি প্রতিষ্ঠানে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এলাকার সুশীল সমাজ মনে করছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ, দেশাত্মবোধ, ইতিহাস-ঐতিহ্য চেতনা জাগ্রত করার প্রয়োজনে হলেও প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা বাঞ্ছনীয়। যদিও স্কুল ও কলেজ পরিচালনা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় বেশ কয়েকটি স্কুল ও কলেজে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু ভাষা আন্দোলনের প্রায় ৭২ বছরেও উপজেলার ২৫০ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এখনো শহীদ মিনার নেই ৬৪টি প্রতিষ্ঠানে যা খুবই দুঃখজনক।
শহীদ মিনার নেই এমন একটি বিদ্যালয় শিবপুর হোসনে আরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, এই বিদ্যালয়ে নতুন বিল্ডিং হওয়ায় শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। কাছাকাছি প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার বানিয়ে সেখানে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। এখন পর্যন্ত কোনো শহীদ মিনার তৈরি হয়নি। চাইলেই কিন্তু ছোট আকারে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার তৈরি করা যায়। তবে সমস্যাটা হচ্ছে বরাদ্দ নেই।
গন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুসরাত জাহান আজাদী বলেন, আমার বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নেই। একই ক্যাম্পাসে অবস্থিত গন্ডা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে আমরা শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আসছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার বলা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় ২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নেই। এর মধ্যে কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হাই স্কুলের সাথে সংযুক্ত। বাকিগুলো তৈরির জন্য জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল আলম বলেন, জেলায় মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে ৬৮টি। তার মধ্যে ৪২ টি প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। কিছু প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে আবার কোন কোন প্রতিষ্ঠান সরকারি বরাদ্দ থেকে শহীদ মিনার নির্মাণ করেছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য কথা বলেছি এবং আবেদন করেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার( ভারপ্রাপ্ত) রাজিব হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কেন্দুয়াতে যে ৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই তা আমাকে উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানানো হয়নি। তবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার দ্রুত নির্মাণের জন্য আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।