আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ছাত্রলীগের দুই নেতা
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত আওয়ামী লীগ নেতার নাম শরিফুল ইসলাম ওরফে সোয়ান (৪৪)। এ হত্যার ঘটনায় ২ ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলায় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিন্দু ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সভাপতি ঝিনুককে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ। এর আগে এদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা শহরের খলিলগন্জ এলাকায় অভিনন্দন কনভেনশন সেন্টারের সামনে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতের স্ত্রী রোজিনা পারভীন বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম সোহানের ওপর হামলা চালায় রেজভীসহ কয়েকজন। পরে হাসপাতালে মারা যায় সোহান। এই ঘটনার পর অভিযুক্ত রেজভীকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে, বিন্দু ও তার অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতা সোহানকে হত্যার অভিযোগে ওঠার পর শুক্রবার রাতে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন বিন্দু। পরে তাকেসহ কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ঝিনুক মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিহত শরিফুল ইসলাম সোহান জেলা শহরের ঘোষপাড়ার হাটিরপাড় এলাকার মৃত আমজাদ হোসেন বুলুর ছেলে। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও জেলা মোটর মালিক সমিতির সদস্য বলে জানা গেছে।
নিহত আওয়ামী লীগ নেতা সোহানের বন্ধু খন্দকার রেদোয়ান মাহমুদ জানান, শহরের খলিলগঞ্জ এলাকায় একটি প্রাইভেট জিপগাড়ী দাঁড়িয়েছিল। এসময় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের দুই নেতা সিয়াম ও রিয়াদের একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জিপের পাশে পড়ে যায় এবং দুজন আহত হন। পরে জিপে থাকা শরিফুল ইসলাম সোহানসহ অপর দুজন তাদেরকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে মেরে ফেলল ছাত্রলীগ নেতা
তিনি জানান, এর কিছুক্ষণ পরেই খবর পেয়ে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার সহযোগীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। এসময় জিপে থাকা আমাদের দুজনকে নামিয়ে দিয়ে শরিফুল ইসলাম সোহানকে মারপিট করতে করতে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে আসে। এতে সোহান অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে ঘটনার পর অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বিন্দু তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘গুজবে কান দেবেন না। সোহান ভাই হার্ট অ্যাটাক করে ইন্তেকাল করেছেন।’
কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ব্যক্তিগত কাজে আমি ঢাকায় রয়েছি। ঘটনা জেনেছি। বিন্দুর সাথে একবার কথা হয়েছে। সে নিজের দায় অস্বীকার করেছে। এ ঘটনায় বিন্দু কিংবা ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনানুগ ব্যবস্থাসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হারাধন ঘোষ বলেন, নিহত সোহান আমার প্রতিবেশী। সে অত্যন্ত ভদ্র ও শান্তিপ্রিয় ছিল। হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।